Zakir Hossain Temple Announcement: এবার মন্দির, মসজিদ, দুটো বানাচ্ছেন TMC-র জাকির, সেই মুর্শিদাবাদেই

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণা করেছেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। এরমাঝেই জঙ্গিপুরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন নতুন উদ্যোগ নিলেন। নিজের বিধানসভা এলাকায় একটি মসজিদ এবং একটি মন্দির তৈরি করতে চলেছেন জাকির।

Advertisement
এবার মন্দির, মসজিদ, দুটো বানাচ্ছেন TMC-র জাকির, সেই মুর্শিদাবাদেইউদ্যোগ জঙ্গিপুরের TMC বিধায়ক জাকিরের


মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণা করেছেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। এরমাঝেই জঙ্গিপুরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন নতুন উদ্যোগ নিলেন।   নিজের বিধানসভা এলাকায়  একটি মসজিদ এবং একটি মন্দির তৈরি করতে চলেছেন জাকির। 

বংশবাটিতে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাকির হোসেন বলেছেন ধর্মের নামে বিভাজন নয়। বরং সব ধমের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর দাবি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ধর্মীয় উপাসনালয়ের অভাব রয়েছে। সেই অভাব পূরণ করতে মন্দির মসজিদের সহাবস্থান প্রয়োজন। শনিবার, ২০ ডিসেম্বর বিকেলে সুতির বংশবাটি গ্রামে একটি  অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন। হিন্দু ধর্মের মন্দির এবং মুসলিম ধর্মের মসজিদ তৈরি করার জন্য তৃণমূল বিধায়ক নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা করে মোট ১ কোটি টাকা দান করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। জঙ্গিপুর বিধানসভা এলাকার প্রচুর মানুষ জাকির হোসেনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, তৃণমূল বিধায়কের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন জেলার পর্যটন মানচিত্রে একসঙ্গে নতুন দু'টি পালক যুক্ত হবে, তেমনি ধর্মপ্রাণ মানুষেরা দু'টি নতুন উপাসনাস্থল পাবেন। সুদৃশ্য মন্দির এবং মসজিদ তৈরি হলে তা দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ মুর্শিদাবাদ জেলায় আসবেন। তার ফলে একদিকে যেমন পর্যটনের  প্রসার ঘটবে, তেমনি প্রচুর সাধারণ মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

 জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাকির হোসেন পরিষ্কার জানিয়েছেন, তিনি ধর্মের রাজনীতি করেন না। তাই প্রস্তাবিত মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণের কাজ আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পরই শুরু হবে। হোসেন বলেন,'অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষ  চান একটা ভালো মসজিদ হোক এবং একটা ভালো মন্দির হোক। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার বিধানসভা এলাকায় একটি সুন্দর মহম্মদী মসজিদ এবং একটি সুন্দর শ্রীকৃষ্ণের মন্দির নির্মাণ করা হবে।  শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের জন্য একটি ট্রাস্ট এবং মহম্মদী মসজিদের জন্য অপর একটি ট্রাস্ট তৈরি করা হবে। ' জাকির হোসেন আরও বলেন,'মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণ করার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে সরকারি নিয়ম মেনে  দু'টি পৃথক ধর্মীয় উপাসনাস্থল তৈরি করা হবে।'

Advertisement

জাকির হোসেন রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেন, মসজিদের জন্য ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে  জমি এবং শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নির্মাণের জন্য কোনও  খাস জমি  যেন ট্রাস্টের নামে বরাদ্দ করা হয়। তবে দু'টি পৃথক ধর্মীয় উপাসনাস্থলের জন্য কেউ ব্যক্তিগতভাবে জমি দানে ইচ্ছুক হলে তাও গ্রহণ করা হবে বলে তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন। জাকির হোসেন বলেন, 'আমি মনে করি ধর্ম অনেক উঁচু স্থানে রয়েছে। মানুষে-মানুষে যাতে ভালোবাসা তৈরি হয় সেই কারণেই মন্দির এবং মসজিদ তৈরির এই উদ্যোগ। তবে রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাতে কেউ বলতে না পারে ধর্ম নিয়ে আমি রাজনীতি করছি তাই মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণের কাজ আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলে তারপরেই শুরু হবে। যদিও খুব শীঘ্রই মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট আমরা গঠন করে ফেলব।' তৃণমূল বিধায়ক'আরও জানিয়েছেন,'মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণের জন্য আমি ৫০ লক্ষ টাকা করে মোট ১ কোটি টাকা দেব। দরকার হলে আমি নিজের  জমি বিক্রি করে এই টাকা দেব।'

তৃণমূল বিধায়কের এই উদ্যোগে প্রচুর সাধারণ মানুষের সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছেন রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গৌতম ঘোষ। তিনি বলেন,'সুদৃশ্য মন্দির এবং মসজিদ নির্মাণ হলে একদিকে যেমন প্রচুর ধর্মপ্রাণ মানুষ  উপাসনার জন্য সেখানে আসবেন, তেমনি সেই  মন্দির এবং মসজিদ দেখার জন্য প্রচুর পর্যটক এই জেলায় আসবেন।' তিনি জানান ,'মহম্মদী মসজিদে যেমন মুসলিম ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষেরা নমাজ পড়বেন ,কোরান পড়বেন তেমনি হিন্দু ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষেরা শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরে আরাধনা করবেন ,গীতা পাঠ করবেন।  দুই ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের এক অনন্য নজির মুর্শিদাবাদ জেলায় আগামী দিন তৈরি হবে।'

রিপোর্টারঃ সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়

POST A COMMENT
Advertisement