শুক্রবার সকালে ইডির একটি দল রেশন দুর্নীতি তদন্তে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ঢোকার মুখে তাঁদের উপর হামলা হয়। তাঁদের গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। হামলায় জখম হন তিন আধিকারিকও। এই ঘটনায় গোটা রাজ্যের সঙ্গে তোলপাড় দেশ। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা থাকলেও তাতে লাভ হয়নি। তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালানো আর হয়নি। তার আগেই আক্রমণে জখম হয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে হয় তাঁদের। সেখানে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের উপরও আক্রমণ চালানো হয়। এ নিয়েই রাত প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কী বলেছেন বিচারপতি?
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন "ইডি আধিকারিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনা গোটা দেশের কাছে বাংলাকে ছোটো করেছে। আশা করব যাঁকে খুঁজতে গিয়েছিল সেই শেখ শাহজাহান রাত ১২ টার মধ্যে ইডি অফিসে এসে ধরা দেবে। আশা করব, তাঁর যারা নেতা আছেন, তাঁরা সেই নির্দেশ দেবে। দুপুরে যা বলেছিলাম, তার সচেতন ভাবে বলেছি। আমি বিশ্বাস করি পশ্চিমবঙ্গ সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে।" আমি জানতে চাই মা-মাটি সরকার তদন্ত আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে কত টাকা খরচ করেছে?
তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'যাঁদের লেলিয়ে দেওয়া হল তাঁরা ভারতবর্ষের নাগরিক তো? তাঁরা অন্য জায়গা থেকে নৌকা করে এখানে ঢোকেননি তো? কারা করেছেন ঘটনাটা?' তিনি আরও বলেন, 'যদি উপযুক্ত তদন্ত হয় আমার ধারণা পুরো সত্যটা বেরিয়ে আসবে এবং কারা কাকে আশ্রয় দিচ্ছে তা জানা যাবে।' যদিও ওই হামলার পরে প্রায় গোটা দিন কেটে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কয়েকজনকে আটক করা হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার পর ওই অফিসারদের দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি ঘটনাকে ভয়ঙ্কর বলে মন্তব্য করেন।
এখন কারা আক্রমণ করেন ইডি অফিসারদের। এটা নিয়ে এখন শুরু হয়েছে চাপানউতর। জনতার ভিড়ে কাদের স্বার্থসিদ্ধি হয়েছে ইডি অফিসারদের আক্রমণ করে। প্রাথমিক বিচার করলে সরাসরি লাভ হয়েছে যার বাড়িতে তদন্তে যাচ্ছিলেন অফিসাররা, সেই শেখ শাহজাহানের। এখন আক্রমণকারীরা তাঁর লোক কি না, তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। এরই মধ্যে হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। তা নিয়ে আবার পাল্টা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
দেবাংশু কী বললেন?
দেবাংশু বলেছেন, রাস্তার ছোড়ারাই "রাজা তোর কাপড় কোথায়" প্রশ্ন তুলতে পারেন অভিজিৎবাবু। সকালে শুভেন্দু অধিকারী রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করার পরেই আপনিও একই ইঙ্গিত করলেন। তারপরে বেলা গড়ানোর পর ওই শুভেন্দুর থেকে "রোহিঙ্গা" ইস্যু তুলে ধরার চেষ্টার পর রাত্রিবেলায় এসে আপনিও সেই একই দিকে ইঙ্গিত করলেন। যা বুঝলাম, বিজেপির ব্রিফিং আপনার কাছে একদম সঠিক সময়ে এসে পৌঁছচ্ছে। এই সমস্ত বক্তব্য রাখার পর আপনার অন্তত আর বিচারপতির চেয়ারে থাকা সাজেনা। লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন।