২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের মনোবল আরও বাড়িয়ে নিল শাসক শিবির। কালীগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পথে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আলিফা আহমেদ। প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের ৩৮ বছরের কন্যা আলিফা আহমেদ এর আগে কালীগঞ্জ থেকে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই উপনির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে একসময় উঠে এসেছিল কংগ্রেস। যদিও তৃণমূল প্রার্থীর থেকে কংগ্রেস ও বিজেপির ভোট অনেকটাই কম।
এদিকে কালীগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূলকে জেতানোর জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটে লিখেছেন, 'কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এলাকার সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব জাতি এবং সর্বস্তরের মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আমাদের বিপুলভাবে আশীর্বাদ করেছেন। আমি নতমস্তকে তাঁদের আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই জয়ের প্রধান কারিগর মা-মাটি-মানুষ। আমার কালীগঞ্জের সহকর্মীরা এর জন্য প্রাণপাত পরিশ্রম করেছেন। তাঁদেরও আমি আমি আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। সবার জন্য রইল আমার প্রণাম ও সালাম। প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদকে স্মরণ করে আমি এই জয় বাংলার মা-মাটি-মানুষকে উৎসর্গ করছি।'
কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এলাকার সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব জাতি এবং সর্বস্তরের মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আমাদের বিপুলভাবে আশীর্বাদ করেছেন। আমি নতমস্তকে তাঁদের আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 23, 2025
এই জয়ের প্রধান কারিগর মা-মাটি-মানুষ।
আমার কালীগঞ্জের সহকর্মীরা এর জন্য…
উল্লেখ্য, তৃণমূলের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন (লাল) আহমেদের মৃত্যুতে নদিয়ার কালীগঞ্জে উপনির্বাচন করাতে হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাড়িতেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন নাসিরুদ্দিন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তাঁর মৃত্যুর পর চার মাস বিধায়কহীন ছিল কালীগঞ্জ। এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০১১ ও ২০২১ সালে জয়ী হয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন। এবার তাঁর কন্যাকেই বেছে নিলেন ভোটাররা।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই উপনির্বাচন যেন অ্যাসিড টেস্ট ছিল শাসক ও বিরোধী দলগুলির কাছে। তৃণমূল এই কেন্দ্রে টিকিটে দিয়েছিল আলিফা আহমেদকে। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান আশিস ঘোষ। বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন কাবিলউদ্দিন আহমেদ। গত বৃহস্পতিবারের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৯ শতাংশ। বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি বাদ দিলে উপনির্বাচন মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ছিল।
এদিনে ভোট গণনা শুরু হতে প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখ ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। আর তৃতীয় স্থানে নেমে যান বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ। প্রথম রাউন্ড থেকেই ভোট গণনানয় এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। অষ্টম রাউন্ড শেষে তৃণমূল প্রার্থীর ঝুলিতে রয়েছে ৩৯ হাজার ৮৩৮ ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৮৩ ভোট। বিজেপির দখলেরয়েছে ১৩ হাজার ২০ ভোট। গতবার দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও উপনির্বাচনে গণনার তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছেন পদ্ম প্রার্থী। এই প্রবণতা বজায় থাকলে তা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়াত গেরুয়া শিবিরের। তবে কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে ১২ রাউন্ডের গণনার পর তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৪০৪টি ভোট৷ বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ পেয়েছেন ২৫ হাজার ৪৩৭টি ভোট৷ কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখ পেয়েছেন ১৮ হাজার ৭৭০টি ভোট৷ ১৬ রাউন্ড গণনার শেষে ৪৫৪৫৬ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল। তৃণমূল পেয়েছে ৭৭,৬১০ ভোট, বিজেপি পেয়েছে ৩২, ১৫৪ ভোট এবং কংগ্রেস পেয়েছে ২৩২৭১ ভোট।