অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর তৃণমূল পার্টি অফিসের মধ্যে বিজেপি কর্মী এক মহিলাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। ওই মহিলা বিজেপি কর্মী রবিবার, ৯ মার্চ অভিযোগ করেছিলেন তাঁকে তৃণমূলের মকরামপুরের একটি কার্যালয়ে পুরনো বিবাদ মেটানোর নাম করে ডেকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতা লক্ষ্মী সিট। সেই অভিযোগ থানায় করতে গেলে থানা প্রথমে এটা গ্রহণ করেনি। এরপরে তা নিয়ে জেলা জুড়ে আন্দোলন শুরু করে বিজেপি। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর হাসপাতালে। বিজেপি জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করলে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ। অন্যদিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই মহিলার শারীরিক পরীক্ষার পরে সোমবার, ১০ মার্চ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়-"শারীরিক নির্যাতনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।" ততক্ষণে যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল তিনি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন নারায়ণগড় থানায়।
রবিবার নারায়ণগড় থানার অন্তর্গত মকরামপুর এলাকার এক মহিলা বিজেপি কর্মী শারীরিক নির্যাতন অভিযোগ তুলেছিলেন মকরামপুর এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী সিটের বিরুদ্ধে। ওই মহিলা ও তার স্বামী এই অভিযোগ করেন। স্বামীর অভিযোগ ছিল-" আমরা বিজেপি কর্মী হওয়াতে আমাদেরকে নানা রকম কটূক্তি অত্যাচার সহ্য করতে হতো। রবিবার আমাদের পুরনো একটি বিবাদের মীমাংসা করার নাম করে আমার স্ত্রীকে অঞ্চল তৃণমূল কার্যালয়ে ডেকেছিলেন তৃণমূল নেতা লক্ষ্মী সিট। পরে লোক মারফত খবর পাই আমার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি সেখান থেকে অন্যান্যদের সহযোগিতায় আমার স্ত্রীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। " এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে নারায়ণগড় থানা অভিযোগ প্রথমে গ্রহণ করেনি বলে নির্যাতিরার দাবি। এর প্রতিবাদে জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি নেতাকর্মীরা। পুলিশ পরে অভিযোগ গ্রহণ করে।
অন্যদিকে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল মেদিনীপুরে হাজির হন। তিনি জেলাশাসকের দফতরের সামনে জেলা বিজেপির কর্মী সমর্থকদের নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন সোমবার দুপুরের পর। অন্যদিকে ওই মহিলার অভিযোগ মতো মেডিক্যাল কলেজে শারীরিক পরীক্ষা হয়। দুপুরে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার পর জানিয়ে দেয় শারীরিক নির্যাতনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এরপরে অগ্নিমিত্রা পালের মন্তব্য-" মেডিক্যাল রিপোর্ট বিকৃত করা হয়েছে। তৃণমূল নেতাকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে।" অন্যদিকে লক্ষ্মী সিট তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পুর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারায়ণগড় থানায়। তবে তা হলেও বিজেপি এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে আন্দোলন চালায় মেদিনীপুর শহরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বেশ কিছু বিজেপি কর্মী সমর্থককে আটক করে।
সংবাদদাতাঃ শাহজাহান আলি