'বিয়ে করব না', থানায় পৌঁছল স্কুলছাত্রী, আজীবন পড়াশোনার দায়িত্ব নিল পুলিশ

ওই স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে আন্দি থেকে বাস ধরে কান্দি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছয়। সেখান থেকে সোজা হাজির হয় কান্দি থানায়। থানার আইসি মৃণাল সিনহার কাছে সে জানায়, তার বাবা জোর করে বিয়ে দিতে চাইছেন। সমস্ত কথা ধৈর্য ধরে শোনেন আইসি। মেয়েটিকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, আইনের চোখে কোনওভাবেই নাবালিকার জোর করে বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।

Advertisement
'বিয়ে করব না', থানায় পৌঁছল স্কুলছাত্রী, আজীবন পড়াশোনার দায়িত্ব নিল পুলিশ'বিয়ে করব না', থানায় পৌঁছল স্কুলছাত্রী, আজীবন পড়াশোনার দায়িত্ব নিল পুলিশ

নিজের জোরপূর্বক বিয়ে আটকাতে থানার দ্বারস্থ হল এক স্কুলছাত্রী। পুলিশের কাছে কাঁপা গলায় আবেদন জানায়, সে বিয়ে করতে চায় না, লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকার একটি গ্রামে।

জানা গিয়েছে, ওই স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে আন্দি থেকে বাস ধরে কান্দি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছয়। সেখান থেকে সোজা হাজির হয় কান্দি থানায়। থানার আইসি মৃণাল সিনহার কাছে সে জানায়, তার বাবা জোর করে বিয়ে দিতে চাইছেন। সমস্ত কথা ধৈর্য ধরে শোনেন আইসি। মেয়েটিকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, আইনের চোখে কোনওভাবেই নাবালিকার জোর করে বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।

এরপর মেয়েটির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। পাশাপাশি খড়গ্রাম থানার চন্দ্রসিংহ বাটি এলাকায় মেয়েটির মামার বাড়িতেও বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা থানায় না এলেও মামা থানায় এসে হাজির হন। পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি ভাগ্নীকে বুঝিয়ে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।

এই ঘটনায় মানবিকতার নজির গড়ে কান্দি থানার আইসি মৃণাল সিনহা ওই স্কুলছাত্রীর লেখাপড়ার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি মেয়েটির মামাকেও খাওয়া ও পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ জানান। মামা সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলছাত্রী বড়ঞা থানা এলাকার বাসিন্দা। এক বছর আগে তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। দুই বোনের মধ্যে সে বড়। বাবার সঙ্গেই থাকত। ছোট বোন কলকাতায় মাসির বাড়িতে থাকে।

ওই স্কুলছাত্রীর কথায়, “আমার বাবা কিছুদিন ধরেই আমার বিয়ে ঠিক করছিল। আমি বারবার বলেছি, আমি বিয়ে করব না, পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু বাবা আমার কথা শোনেনি। পাশের গ্রামের ৩৫ বছরের এক যুবকের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। শনিবার ছিল বিয়ের দিন। বাধ্য হয়ে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে থানায় এসে সাহায্য চাই।” পুলিশের পাশে পেয়ে সে খুশি এবং ভবিষ্যতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আশাও প্রকাশ করেছে।

Advertisement

রিপোর্টারঃ সব্যসাচী ব্যানার্জি

 

POST A COMMENT
Advertisement