মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে রাজনৈতিক সংঘাত তুঙ্গে, বিজেপি-তৃণমূলে চাপানউতরMurshidabad Violence BJP TMC Clash: মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। ঘটনাকে ঘিরে রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ঘিরেও শুরু হয়েছে তর্ক-বিতর্ক। বিজেপি, তৃণমূলের পাশাপাশি ময়দানে নেমেছে সিপিএম,কংগ্রেসেও।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানান, "এই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত একান্ত জরুরি ছিল। দুই নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্পূর্ণভাবে অবগত আছেন।" বিজেপির দাবি, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এবং কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া অবস্থা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।
দিলীপ ঘোষের বিস্ফোরক অভিযোগ:
বিজেপির আরেক শীর্ষ নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, "মুর্শিদাবাদকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে। হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকায় আগুন, লুটপাট ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। অথচ রাজ্যের ডিজিপি বলছেন, কিছুই ঘটেনি।"
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের নীরবতা প্রমাণ করে, এই ঘটনা পরিকল্পিত এবং রাজনৈতিকভাবে প্রশ্রয়প্রাপ্ত।
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা জয় প্রকাশ মজুমদার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই ধর্মকে হাতিয়ার করে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে। আজকের এই ঘটনা সেই ষড়যন্ত্রেরই ফল। তারা পরিকল্পনা করেই এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যাতে পরে হাইকোর্টে গিয়ে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের দাবি তুলতে পারে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "বিজেপি যে বিভাজনের আইন তৈরি করেছে, সেটাই এই হিংসার মূল কারণ। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছেন, আমরা এই আইন রাজ্যে বাস্তবায়ন করব না।"
পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
মুর্শিদাবাদে যেভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ে রাজ্যের সাধারণ নাগরিকরাও উদ্বিগ্ন। বিজেপি যেখানে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের আভাস দিচ্ছে, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার জন্য বিজেপির "রাজনৈতিক চক্রান্ত" কে দায়ী করছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। রাজনৈতিক দোষারোপের বাইরে গিয়ে হিংসা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করাই রাজ্যবাসীর প্রত্যাশা।