শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু হয়েছে সিঙ্গুরের নার্স দিপালী জানার, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনটাই জানাল কল্যাণী এইমস। ফলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার তত্ত্বই জোরালো হয়েছে। সিঙ্গুরে নার্সের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের দাবি মেনেই এইমসে হয়েছিল ময়নাতদন্ত।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ অগাস্ট, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরের বোড়াই নার্সিংহোমের চারতলা থেকে উদ্ধার হয়েছিল দীপালি জানা নামে এক নার্সিং পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ৷ মৃত্যুর ঠিক দু’দিন আগেই নার্সের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে তার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। তাঁদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর, ১৬ অগাস্ট কল্যাণীর এইমসে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল। মৃতের পরিবারের দাবি মেনে এইমসে ময়নাতদন্ত হয়েছিল ৪ জন ফরেনসিকের সিনিয়র ডাক্তারের উপস্হিতিতে, সেই সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফি হয়েছিল গোটা ঘটনার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘Antemortem Hanging’ শব্দবন্ধের উল্লেখ করা রয়েছে। ফলে ওই নার্স গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন এই তত্ত্বই জোরালো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন এবং শারীরিক নির্যাতনের কোনও চিহ্ন ছিল না। পাশাপাশি ধৃত প্রেমিক রাধাগোবিন্দর মোবাইল ফোন খোঁজার চেষ্টা করছে সিঙ্গুর থানার পুলিশ।
এদিকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ । উল্লেখ্য, সঙ্গুরে নার্স দীপালি জানারে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বিরোধীরাও। পরিবারের দাবি মেনে মৃত নার্সের দেহ কল্যাণী এইমসে পাঠানো হয়েছিল। আর সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই এবার বিরোধীদের নিশানা করেছে শাসকদল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। যা নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'যারা এই মৃত্যু নিয়ে শকুনের মতো রাজনীতি করেছিল, তারা এখন নাকখত দিয়ে ক্ষমা চাওয়াই উচিত। আমরা তো শুরুতেই বলেছিলাম পুলিশ ও প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। যখন বলা হল কেন্দ্রীয় হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হোক, তখনও আমরা রাজি হয়েছিলাম।' এর পাশাপাশি কুণাল আরও বলেন, ‘মৃত্যু যেকোনও কারণেই হোক, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু বিজেপি ও সিপিএম (যেভাবে প্রকাশ্যে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল, তা নিন্দনীয়। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের হাসপাতালের রিপোর্টেই প্রমাণিত হয়ে গেল কারা মিথ্যেবাদী। যারা মৃতদেহ নিয়েও রাজনীতি করতে পারে, তারা কতটা নীচে নামতে পারে, তা এবার জনগণের বোঝা উচিত।’