Mousuni Island News : শিক্ষকরা ব্যস্ত SIR নিয়ে, মৌসুনি দ্বীপের স্কুলে তাই ক্লাস নিচ্ছেন ‘রাঁধুনি দিদি’

ক্লাসরুমে শিশুরা বসে,সামনে দাঁড়িয়ে রাঁধুনি দিদি। আর দূরে, গ্রামের বাইরে মাঠে ঘুরে ঘুরে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করছেন তিন শিক্ষক। এই বৈপরীত্যই এখন বাস্তব দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌসুনি দ্বীপে। স্কুল চলছে, কিন্তু পড়াশোনা নেই। শিক্ষকরা আছেন, কিন্তু স্কুলে নেই। আর শিক্ষকের অভাবে মিড-ডে মিলে রান্না করা হাতেই তুলে নিতে হচ্ছে চক ডাস্টার। পরীক্ষা দরজায়, অথচ কুসুমতলা পশ্চিম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দিন কাটাচ্ছে শিক্ষকবিহীন ক্লাসে।

Advertisement
 শিক্ষকরা ব্যস্ত SIR নিয়ে, মৌসুনি  দ্বীপের স্কুলে তাই ক্লাস নিচ্ছেন ‘রাঁধুনি দিদি’মৌসুনি দ্বীপের স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন ‘রাঁধুনি দিদি’

ক্লাসরুমে শিশুরা বসে,সামনে দাঁড়িয়ে রাঁধুনি দিদি। আর দূরে, গ্রামের বাইরে মাঠে ঘুরে ঘুরে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করছেন তিন শিক্ষক। এই বৈপরীত্যই এখন বাস্তব দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌসুনি দ্বীপে। স্কুল চলছে, কিন্তু পড়াশোনা নেই। শিক্ষকরা আছেন, কিন্তু স্কুলে নেই। আর শিক্ষকের অভাবে মিড-ডে মিলে রান্না করা হাতেই তুলে নিতে হচ্ছে চক ডাস্টার। পরীক্ষা দরজায়, অথচ কুসুমতলা পশ্চিম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দিন কাটাচ্ছে শিক্ষকবিহীন ক্লাসে।

প্রসঙ্গত, SIR নিয়ে ব্যস্ত স্কুলের শিক্ষকরা। তাঁরাই BLO। দিনরাত ঘুরে ঘুরে কাজ করছেন, রাত জেগে চলছে ডিজিটাইজ়েশনের কাজ। এক দিকে ভোটার তালিকার কাজ নিয়ে শিক্ষকরা যখন ব্যস্ত, তখন স্কুলের পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠতে চলেছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকহীন স্কুলে খুদেদের পড়াতে দেখা গেল মিড-ডে মিলের ‘রাঁধুনি দিদিকে’ই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের প্রত্যন্ত দ্বীপ মৌসুনির কুসুমতলা পশ্চিম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই ছবি ভাইরাল। প্রশ্ন উঠছে এভাবেই কি চলবে দ্বীপের শিশুদের ভবিষ্যৎ?

মৌসুনি দ্বীপের প্রত্যন্ত এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ১৫ জন। কিন্তু এই ছোট্ট স্কুলই আশ্রয় গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের। তিন জন শিক্ষক থাকলেও তিন জনই এখন সম্পূর্ণ ব্যস্ত ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR-এর কাজে। বিএলও-র দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে সকালবেলা হাজিরা দিয়েই তাঁদের রওনা হতে হচ্ছে মাঠে। ফলে ক্লাসরুমে এসে পড়ুয়ারা বসে থাকলেও পড়ানোর মতো শিক্ষক নেই। শিক্ষক না থাকায় কয়েক দিন ধরে ঠিক মতো মিড-ডে মিলও দিতে পারেননি রাঁধুনি। সারাদিন বসে থাকা, দুষ্টুমি করা আর মাঝেমধ্যে কান্নাকাটি এই দৃশ্যই এখন নিয়মিত হয়ে গিয়েছে ওই স্কুলে।

এই অবস্থায় শিশুদের দেখভালের ভার এসে পড়ে রাঁধুনি অনুমতি মণ্ডলের উপর।  কাজ সামলে, কখনও চাল-ডাল ধুয়ে, কখনও সবজি কেটে, আবার কখনও চক-ডাস্টার হাতে নিয়ে পড়ুয়াদের সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে তাঁকেই। অনুমতি দেবীর কথায়, শিক্ষকরা নেই, তাই শিশুদের একা রাখা যায় না। তারা দুষ্টুমি করলে আঘাত পেতে পারে। আমি যা একটু জানি, মুখে মুখে পড়িয়ে দিই। কাজটা আমার নয়, কিন্তু শিশুদের ফেলে রাখা যায় না। তাঁর এই দায়বদ্ধতা গ্রামবাসীদের প্রশংসা কুড়োলেও, অভিভাবকদের ক্ষোভ থামছে না।

Advertisement

অভিভাবক প্রতিমা মণ্ডল,করুণা মণ্ডলদের অভিযোগ, 'রাঁধুনি দিদি চেষ্টা করছেন ঠিকই, কিন্তু শিশুদের তো নিয়মিত পড়াশোনা দরকার। সামনে পরীক্ষা, কিন্তু ক্লাসই তো হচ্ছে না। শিক্ষকরা মাঠে সারাদিন ঘুরছেন। তা হলে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ কোথায়? তাঁদের দাবি, শিক্ষক বদলি হওয়ায় সংখ্যা কমেছে ঠিকই, কিন্তু বাকিরা এসআইআরের কাজে প্রায় পুরো সময় ব্যস্ত থাকলে ক্লাসের দায়িত্ব কী ভাবে সামলানো হবে? তার উত্তর প্রশাসনকে দিতে হবে। দ্বীপে থাকি বলেই কি আমাদের সন্তানদের কম গুরুত্ব দেওয়া হবে?  অবিলম্বে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ বা অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক। নইলে শিক্ষকহীন ক্লাসরুমে দিনের পর দিন বসে থাকলে তো ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’

রিপোর্টারঃ প্রসেনজিৎ সাহা

POST A COMMENT
Advertisement