সন্দেশখালিতে ক্ষুব্ধ মহিলাদের তাড়া খেয়ে অন্যের বাড়িতে ঢুকে প্রাণে বাঁচতে চাওয়া তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে অবশেষে গ্রেফতার করল পুলিশ। আজ অর্থাত্ সোমবার সকালে অজিতকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবারই অজিতকে ওই বাড়ি থেকে লুকিয়ে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দল পাশে নেই।
অন্যের বাড়িতে ঢুকে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দেন অজিত
রবিবার সন্দেশখালির বেড়মজুরে হরিনাম সংকীর্তন চলছিল। সেখানে রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসু যোগ দেন। পার্থকে দেখা যায়, খোল বাজিয়ে কীর্তন গাইছেন আর নাচছেন। তাল কাটে বেলা গড়াতেই। জানা যায়, তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে তাড়া করেছেন গ্রামের ক্ষুব্ধ মহিলারা। প্রাণ বাঁচাতে তিনি স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে পড়েন। ঢুকেই দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এ দিকে ওই বাড়ির লোক তখন বাইরে স্নান করছিলেন। স্নান সেরে ঘরে ঢুকতে গিয়ে তিনি দেখেন, দরজায় তালা। ওই ব্যক্তির দাবি, নিমন্ত্রণ আছে বলে সকাল সকাল স্নান সেরে পোশাক পরতে ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা।
'দাদা, দরজা খুলবেন না। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে'
অন্যদিকে ঘরের ভেতর থেকে আর্তনাদ, 'দাদা, দরজা খুলবেন না। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।' গণপিটুনির ভয়ে কাঁদতে শুরু করেন অজিত। এই ভাবেই কাটে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা। বাইরে পুলিশ জড়ো হয়। তাঁরা জানান, ভয় নেই। বেরিয়ে আসতে পারেন। গেটের ফাঁক দিয়ে দেখা যায়,কাঁপছেন অজিত। বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কাউকে ফোন করার। সন্দেশখালির অন্য একটি জায়গা থেকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক জানিয়ে দেন, দল তাঁর পাশে নেই। তাঁর পদও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, 'অন্যায় করলে তো রাগের বহিঃপ্রকাশ হবেই।' এরপর সন্ধ্যায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পুলিশ অজিতকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অজিত মাইতি শেখ শাহজাহানের অনুগামী। শাহজাহানের ভাইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বহু জমি দখল করেছেন।
REPRISAL: People of #Sandeshkhali chased TMC leader Ajit Maity, who took shelter in fear in a cop’s house.
— Abhijit Majumder (@abhijitmajumder) February 25, 2024
Angry villagers demanded that Maity, a Sheikh Shahjahan aide, be handed over to them.
He apparently grabbed their land, money.
Maity denies it, pleads for justice. pic.twitter.com/1VQkNINGPC
'মারধর করে তৃণমূলে আনা হয়'
যদিও অজিত মাইতি বলেন, 'আমাকে ঘিরে কেন বিক্ষোভ হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমি নিজে বা কারও হয়ে জমি দখল করিনি। আমি জমি দখলের বিষয়ে কিছু জানি না। আমি এখন শুনছি। আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি এতদিন। কেউ বলেওনি। আমি বিজেপি করতাম। ২০১৯ সালে আমাকে মারধর করে তৃণমূলে নিয়ে আসা হয়। আমি এখন তৃণমূলেই আছি। ২০১৯ সালে শাহজাহানের ভাই সিরাজউদ্দিনের নেতৃত্বে মারধর করে তৃণমূলে আনা হয়। সিরাজ দুর্নীতি করেছে সব, আমি পচা আলুর দলে থেকে পচে গিয়েছি। আমি কালই অঞ্চল সভাপতি হয়েছি। আমি পদত্যাগ করব। সবাই ভাবছে আমি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। তাই আমি পদত্যাগ করব। সব বুঝলে আমি থাকতাম না।'