Bengal Woman Tortured Porn: পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক মহিলাকে পর্নোগ্রাফি শ্যুট ও বার ডান্সারের কাজ করতে রাজি না হওয়ায় নির্মমভাবে মারধর ও অত্যাচার করা হয়। ওই মহিলা ছয় মাস ধরে একটি ফ্ল্যাটে আটকে ছিলেন, যেখানে তার হাত, পা এবং দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়, লোহার রড দিয়ে মারা হয় এবং দিন পর দিন খাবার দেওয়া হয়নি।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন পানিহাটি এলাকার ওই মহিলা হাওড়া জেলার বাসিন্দা আরিয়ান খানের সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি ওই মহিলাকে বেশি আয়ের একটি চাকরির প্রস্তাব দেন। আগে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করা ওই মহিলা প্রস্তাবটি বিশ্বাস করে হাওড়ায় যান এবং ডোমজুড়ে তার ফ্ল্যাটে আটকে পড়েন।
ওই মহিলার পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত আরিয়ান খান ও তার মা শ্বেতা খান মহিলাকে পর্নো ভিডিও শ্যুট ও বার ডান্সারের কাজ করতে প্রস্তাব দেন। কিন্তু মহিলা রাজি না হলে অভিযুক্ত ও তার মা তার উপর লাগাতার শারীরিক নির্যাতন চালান। এমনকি তার গোপনাঙ্গে লোহার রড প্রবেশ করানোর চেষ্টাও করা হয়।
মহিলার পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগ, মারধর এতটাই ছিল যে, সে ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছিল না। মাথা, পা ও কোমরে গুরুতর আঘাত করা হয়েছিল লোহার রড দিয়ে। বর্তমানে ওই মহিলা সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তিনি জানান, তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তিনি টানা পাঁচ মাস ধরে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
মহিলার পরিবার খড়দহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। শনিবার অভিযুক্তদের ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে এসে মহিলা নিজের জীবন বাঁচান। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, শ্বেতা খান 'ইসারা এন্টারটেইনমেন্ট' নামে একটি প্রোডাকশন হাউস শুরু করেন আরিয়ান খানের সঙ্গে। তারা ২০২১ সালে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলেন। কিন্তু গত চার বছরে মাত্র ১১টি মিউজিক ভিডিও আপলোড করা হয়েছে, যা সন্দেহের উদ্রেক করে।
তথ্য অনুসারে, প্রোডাকশন হাউসটি একটি পর্নোচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত আরিয়ান খান ও তার মা স্থানীয় এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন বলেও জানা গেছে। অভিযোগ, আরিয়ান খান যেসব লোক তাদের বিরোধিতা করতেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতেন, যদিও তিনি নিজে নানা অসামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন।
তারা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, তার ভাড়াও নাকি দীর্ঘদিন ধরে দেননি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্বেতা খান ওই এলাকায় ফুলতুশি বেগম নামে পরিচিত এবং তিনি নিজে একসময় বার ডান্সার ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাওড়ায় অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা দেওয়া হলেও তারা বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক। মহিলার মা দাবি করেন, তার মেয়েকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছেন শ্বেতা খান এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।