অ্যাডেনো ভাইরাসে (Adenovirus) শিশুদের আক্রান্তের গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। ইতিমধ্যেই এমন বেশ কিছু শিশুর মৃত্যু হয়েছে যাদের দেহে মিলেছে অ্যাডেনো ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ। পরিস্থিতি একদিকে যেমন আতঙ্ক বাড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে, তেমনই উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমহলও। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডেনো ভাইরাসারের উপসর্গ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রফেসার তথা প্রিন্সিপাল ডাঃ জয়দেব রায়।
চিকিৎসক জয়দেব রায় জানাচ্ছেন, অন্যান্য ভাইরাসের মতো এটিও একটি ভাইরাস। তবে সমস্ত সর্দিকাশি জ্বরই যে অ্যাডেনো ভাইরাস, তা নয়। অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রায় ১০০টি স্ট্রেন রয়েছে। এর মধ্যে যে কোনও স্ট্রেনে মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে ৩ এবং ৭ নম্বর স্ট্রেনটি বেশি দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যেও ৭ নম্বর স্ট্রেনটি বেশি মারাত্মক বলে মনে করছেন জয়দেববাবু।
তিনি আরও জানাচ্ছেন, অ্যাডেনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মূলত ৩ ধরণের বিষয় দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ সাধারণ প্যারাসিটামল, কাফ সিরাপ ইত্যাদি ওষুধে সেরে উঠছে। কেউ আবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তবে তাদের ইনটেনসিভ কেয়ার লাগছে না। তবে কাউকে কাউকে ইনটেনসিভ কেয়ারে পাঠাতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রি ম্যাচিওর বেবি, লো বার্থ ওয়েট বা ঘন ঘন রেসপিরেটারি ট্র্যাক ইনফেকশনে যারা আক্রান্ত হয় তাদেরকেই বেশিরভাগ সময় ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
অ্যাডেনো ভাইরাসের উপসর্গ (Adenovirus Symptoms)
ডাঃ রায় জানাচ্ছেন, অন্যান্য ভাইরাসের মতো এক্ষেত্রেও জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচি দেখা যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে জ্বর খুব বেশি থাকছে। তাছাড়া কারও কারও ক্ষেত্রে কনজাংটিভাইটিস ও ডায়রিয়াও দেখা যাচ্ছে।
মেনে চলতে যে সমস্ত সতর্কতা (Adenovirus Precaution)
চিকিৎসক জয়দেব রায় জানাচ্ছেন, প্রথমবারের পর দ্বিতীয়বারও শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন জয়দেববাবু। বাবা-মায়েদের উদ্দেশে জয়দেববাবুর পরামর্শ -
১. শিশুদের ভিড়ে না নিয়ে যাওয়া
২. মাস্ক পরানো
৩. ভাল করে হাত ধোয়া
৪. বড়দের কাশি থাকলে শিশুদের সংস্পর্শে না যাওয়া
৫. অনেকসময় মল থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে, তাই মলের ডিসপোসাল সঠিকভাবে করা।
৬. একটানা সর্দি কাশিতে ভুগলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া
অন্যদিকে হাসপাতালগুলিকে তাঁর পরামর্শ (Adenovirus Treatment), পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুদ রাখতে হবে, পরিকাঠামো ঠিক রাখতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে যেন ইনটেনসিভ কেয়ারের বেড ভর্তি না থাকে, সেই বিষয়টি দেখতে হবে।
আরও পড়ুন - অ্যাডেনোতে আরও ২ শিশুর মৃত্যুর মধ্যেই নির্দেশিকা রাজ্যের, কী কী মানতে হবে?