Anish Khan Death Case Howrah SFI DYFI Protest: ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমেছিল বাম ছাত্রযুবরা। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অফিসে ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই কর্মসূচি থেকে হিংসার অভিযোগ উঠল। গ্রেফতার করা হয়েছে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর।
তুমুল উত্তেজনা
পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাওকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল। আনিস খান রহস্য মৃত্যু ঘটনার প্রতিবাদে এসএফআই মিছিলের ডাক দিয়েছিল। রানিহাটি মোড় থেকে পানিয়ারা হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার অফিস ঘেরাও করতে শুরু হয়। প্রচুর মানুষ এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন। বাম ছাত্রযুব ছাড়াও অংশ নেন স্থানীয় মানুষ। দফায় দফায় সঙ্ঘর্ষ চলে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট মারা হয়েছে।
জঙ্গি বিক্ষোভে রনক্ষত্র পানিয়ার পুলিশ সুপারের অফিস। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে সরগরম সুপার অফিস।
পূর্ব ঘোষণা মতোই আজকে পানিয়ারাতে জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি নেয় বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মসূচির পূর্বেই বিশেষ ব্যবস্থা নেই হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ। বিক্ষিতকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য মোতায়েন রাখা হয়েছে জল-কামান।
পুলিশ সুপারের অফিসের মধ্যে যাতে কেউ ঢুকে না পড়তে পারে তার জন্য মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাশাপাশি পুরো অফিসকে গার্ড-রেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের বন্দোবস্ত দেখে মনে হচ্ছে যেন যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জেলা পুলিশের সুপারের অফিস।
আনিস খান মৃত্যুর প্রতিবাদে হাওড়া গ্রামীণ এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি। বিশাল পরিমাণ এ পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সাথে জলকামান। বিশাল সংখ্যায় ছাত্র-যুবরা আজকের এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয়।
বামপন্থী ছাত্র-যুবদের দাবি, অবিলম্বে আনিশের হত্যাকাণ্ডে যারা যুক্ত তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। জেলা পুলিশ সুপারের উপরেও কড়া শাস্তির দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা। যে সমস্ত পুলিশকর্মীরা এই ঘটনায় যুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। পাশাপাশি যাদের নির্দেশে ওইদিন রাতে পুলিশকর্মীরা আনিসের বাড়িতে যায় তাদের নাম সামনে আনতে হবে। তাদেরও গ্রেফতার করতে হবে অবিলম্বে।
মিছিল পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে পৌঁছলে তাঁদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। এরপরই বচসা বাঁধে ছাত্র যুব কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের। সেই বচসা পৌঁছয় হাতাহাতিতে। উদ্ধত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশের দাবি ছাত্র যুব বিক্ষোভের মধ্যে থেকে প্রচুর সংখ্যায় ইঁট পাথর পুলিশকে লক্ষ করে ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ।
সুপারের অফিসের সামনেও প্রচুর সংখ্যায় ইঁট পাথর পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশের লাঠির আঘাতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয় বলে বাম সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে আহত হন কয়েকজন পুলিশকর্মী। দুপক্ষের লড়াইতে দীর্ঘ ৪০ মিনিট ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ ছিল।
তারপরেও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় পানিয়ারার সামনের জাতীয় সড়কে। পুলিশ সুপারের অফিস কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ইঁট, পাথরের বৃষ্টির মধ্যে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। বিক্ষোভকারীদের ইঁট বৃষ্টির মধ্যে পড়ে পুলিশ কার্যত পিছু হঠতে বাধ্য হয় ছাত্র-যুব বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। তিনি গোটা ঘটনার খোঁজ নেন।
যদিও বামকর্মীদের দাবি তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিছিল ও পথসভা করছিল। পুলিশ অহেতুক তাদের কর্মীদের প্ররোচনা দিচ্ছে অশান্তি সৃষ্টির জন্য। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়েছে। দাবি পুলিশের যথেষ্ট সংযম দেখাচ্ছে পুলিশ। বিক্ষোভের নামে ভাঙচুরের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে এই প্রতিবাদ মিছিল হিংস্র হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এর জেরে উত্তাল পরিস্থিতি ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে।মিছিল থেকে ইঁট-পাটকেল ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। জনতাকে ছত্রখান করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ছুটিতে ওসি
এর আগে এই ঘটনায় ছুটিতে পাঠানো হয়েছে আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীকে। নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন কিঙ্কর মণ্ডল। ভবানী ভবন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। আমতার প্রতিবাদী ছাত্রনেতা অনিস খান হত্যাকাণ্ডের জেরে এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। আমতা থানার ওসিকে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই পুলিশকর্মী গ্রেফতার হয়েছে।
সূত্রের খবর কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওসিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেই সিট সূত্রে খবর। তাকে ছুটিতে পাঠিয়ে তার জায়গায় আমতা থানার দায়িত্বে আনা হল কিঙ্কর মণ্ডলকে।
আরও জানা গিয়েছে, স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের সদস্য ছিলেন কিঙ্কর মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকালে আমতা থানার ওসির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই সরব হয়েছিলেন গ্রেফতার হওয়া হোমগার্ড এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার। তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি ষড়যন্ত্র এবং ফাঁসানোর অভিযোগ করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বেশি কিশমিশ খাচ্ছেন? লাভের বদলে হতে পারে অনেক ক্ষতি
আরও পড়ুন: 'বিরোধীরা ভোট চাইতে এলে জুতোপেটা করুন,' TMC নেতার নিদানে বিতর্ক