আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই চাঙ্গা রাজনীতির মাঠ। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস নানা কর্মসূচি, সম্মেলন ও জনসংযোগে মন দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ ফের সামনে এল বীরভূম জেলায়। আর সেই সূত্র ধরেই ফের একবার শিরোনামে কেষ্ট অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ।
সিউড়ির রবীন্দ্র সদনে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাধিক হেভিওয়েট, অনুব্রত মণ্ডল, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিকাশ রায়চৌধুরী, মলয় মুখার্জি প্রমুখ। এই সভায়ই উঠে এল দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের প্রসঙ্গ।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল নেতা মলয় মুখার্জি বলেন, 'আমাদের শত্রু বিজেপি নয়, সিপিএম নয়, আমাদের শত্রু আমাদের দলের নেতারা। এক দলে দু’জন নেতা থাকলে একজন বলেন, আমি বড়, আর একজন বলেন, আমি বড়। কালীদাসের মতো নিজেদের ডাল নিজেরাই কেটে ফেলছি।'
এই মন্তব্যকেই প্রকাশ্যে সমর্থন করেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, 'মলয় মুখার্জি দামী কথা বলেছেন। তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল। এখানে এক কথা বলছে, বাইরে গিয়ে আরেক কথা বলছে। তিনটে ছাগল থাকলে যেমন লাফালাফি হয়, দলের মধ্যেও এখন সেই অবস্থা।'
‘তিনটে ছাগল’ মন্তব্য ঘিরে জলঘোলা
অনুব্রতের এই মন্তব্য ঘিরেই এখন রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা। তাঁর ‘তিনটে ছাগল’ মন্তব্যের লক্ষ্য কে? অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে কাজল শেখের রাজনৈতিক উচ্চতা যে বেড়েছিল, তা অস্বীকার করা যায় না। অনুব্রতর প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই দুই শিবিরের টানাপড়েন একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে।
ফলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, অনুব্রতের মন্তব্য পরোক্ষে সেই দ্বন্দ্বেরই প্রতিফলন। আবার ‘তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল’ মন্তব্য থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, ২০২৬-এর নির্বাচনে কি তৃণমূল নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবে?
দলের মধ্যে ঐক্য ফেরানোর বার্তা?
বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকেই বারবার উঠে এসেছে ‘একসঙ্গে চলার’ বার্তা। নেতারা বারবার দলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে এই আহ্বানের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, এই বার্তা কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর প্রয়াস? নাকি ভোটের মুখে রাজনৈতিক চিত্র নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল?