পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনায় অবশেষে দলীয় শো-কজের জবাব দিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে। দাবি করলেন, ঘটনাটি আত্মরক্ষার জন্য ঘটেছে, কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না, এবং তাঁর কাজ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেনি।
ঘটনাটি ঘটে ৩০ জুন খড়্গপুরের খরিদা এলাকায়। অভিযোগ, অনিল দাসকে রঙের দোকান থেকে টেনে রাস্তায় এনে মারধর করেন বেবি ও তাঁর সঙ্গী এক মহিলা। একটি ভিডিওতে (যার সত্যতা বাংলা ডট আজতক ডট ইন যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছে, প্রবীণ অনিল দাসের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন বেবি। এই ঘটনার পর বামপন্থী নেতা অনিল থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন এবং কয়েক দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ছাড়া পান।
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনার পরপরই বেবিকে শো-কজ করে। তবে চিঠি পাওয়ার ছয় দিন পর, রবিবার শো-কজের জবাব দিয়েছেন বেবি। সূত্রের খবর, নিজের পক্ষে সাফাই দিয়ে তিনি চিঠিতে লেখেন, 'প্রথমে উনি (অনিল দাস) আমাকে নির্যাতন করেন। আত্মরক্ষার্থে আমি ওই পথ বেছে নিই।' তিনি জানান, এটি ছিল একটি ব্যক্তিগত বিতর্ক, কোনও রাজনৈতিক সংঘাত নয়। বেবির অভিযোগ, অনিল দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করে আসছেন এবং তাঁকে নির্যাতন করে চলেছেন।
বেবি তাঁর জবাবে আরও লেখেন, 'যদি সুযোগ দেওয়া হয়, আমি বিস্তারিত ভাবে বলতে চাই কীভাবে উনি (অনিল) আমাকে হেনস্থা করেছেন। একটি চিঠিতে সব বলা সম্ভব নয়।' তিনি এও দাবি করেন, এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
অন্যদিকে, অনিল দাস কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়ে বিচার চেয়েছেন এবং তাঁর স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে বলেন, পুলিশ প্রভাবশালী নেত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যদিও বেবিও পাল্টা অনিলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি (সাংগঠনিক) সুজয় হাজরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'অফিসিয়ালি এখনও পর্যন্ত আমি বেবির জবাব পাইনি, শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। চিঠি হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'