ভারতে বাংলাদেশিদের অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছেই। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বাংলাদেশি ধরা পড়ছে। এ হেন পরিস্থিতিতে এবার একেবারে বাংলাদেশে প্রাক্তন পুলিশকর্তা ভারতে অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়ল। নাম মহম্মদ আরিফুজ্জামান। হাসিনা সরকারের আমলে আরিফুজ্জামান ছিল রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার। একাধিক খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আরিফুজ্জামানকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ।
কে এই আরিফুজ্জামান?
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে জুলাই আন্দোলনের বিচারপ্রক্রিয়ায় গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিটি বাজার সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লিগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত কলা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলাতেও নাম রয়েছে আরিফুজ্জামানের। সেই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা করিয়ে নিজের নাম কেটে দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। গত বছর ১৪ অগাস্ট বিনা মহম্মদ আরিফুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে অপরাধীদের তালিকায় ৪ নম্বরে রয়েছে আরিফুজ্জামামের নাম।
কীভাবে ঢুকছিল ভারতে?
আরিফুজ্জামান বাংলাদেশে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল। গত শনিবার রাতে সাতক্ষীরা সীমান্ত হয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরবাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্ট পেরোচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ই বিএসএফ আটক করে। জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে আরিফুজ্জামানের আসল পরিচয়। জানা যায়, হাসিনা সরকারের আমলের উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা ছিল সে। বিএসএফ তাকে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। আপাতত স্বরূপনগর থানায় লক-আপে রাখা হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি পড়ছিল। আরিফুজ্জামান সেই সুযোগটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। ভেবেছিল, এত দুর্যোগে চেকপোস্ট নিরাপত্তা শিথিল থাকতে পারে। তাই ভারতে ঢোকা সহজ হবে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
হাসিনা সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের চেষ্টা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের সব প্রান্তেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশদের ধরপাকড় চলছে। অনেককে পুশব্যাকও করে দিয়েছে বিএসএফ। কিন্তু এই রকম প্রাক্তন পুলিশকর্তা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনা এই প্রথম।
সমাপ্ত