বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। সেনার হাতে শাসনভার। তৈরি করা হবে অন্তর্বর্তী সরকার। চারদিকে চলছে লুঠপাট। এই পরিস্থিতিতে ভারতে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে আটক করা হল। ভুয়ো ভারতীয় নথি উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলার কোচবিহার থেকে আটক করা হয়েছে ওই দম্পতিকে।
জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির নাম এনামুল হক সোহেল এবং সানজাদা জিনা এলাহি। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে শিশু সন্তান। উদ্ধার করা হয়েছে একটি প্যান কার্ড এবং আধার কার্ড। মঙ্গলবার চ্যাংড়াবান্ধায় অভিবাসন চেক পোস্টে ওই দম্পতিকে আটক করা হয়।
ওই দম্পতিকে আটক করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশের রংপুরের বাসিন্দা সোহেল। দম্পতির ব্যাগে ভারতীয় নথি পাওয়া যায়। ওই নথিগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দম্পতিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে অশান্তির নানা ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। চালানো হচ্ছে নজরদারি।
১৫ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছে সোমবার। শাসনভার এখন সেনার হাতে। সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই পদ্মার ওপারে অশান্তি নতুন মাত্রা নিয়েছে। হামলা, লুঠ, খুনোখুনি চলছে। বাংলাদেশের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টার সূত্রে খবর, ২৭টি জেলায় হিন্দুদের বাড়ি, দোকানে হামলা চালানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যায় তেলিপাড়া গ্রামে প্রদীপ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। মুহিন রায় নামে এক ব্যক্তির কম্পিউটারের দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে ৪ হিন্দু পরিবারে হামলা, লুঠ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। হাতিবাঁধা উপজেলার পূর্ব সরডুবি গ্রামে ১২টি হিন্দু ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মেহেরপুরে ইস্কনের মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর বেশি হামলা চালানো হচ্ছে, যা উদ্বেগের বলে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন রাজ্যসভায় বাংলাদেশ নিয়ে বিবৃতি দিয়ে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ আমাদের খুব কাছের। জানুয়ারি মাস থেকে সেখানে উত্তেজনা রয়েছে। জুন-জুলাইয়ে হিংসা শুরু হয়। সেখানকার রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগায়োগ রেখেছিলাম। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও বাংলাদেশে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনাকে ইস্তফা দিতে হল। ৪ অগস্ট পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। অধিকাংশ হামলা চালানো হয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর, যা উদ্বেগের।' পরে লোকসভাতেও বিবৃতি দিতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'মন্দির, সংখ্যালঘুদের দোকানে হামলা চালানো হচ্ছে, যা উদ্বেগের।'