ভোটার লিস্ট (প্রতীকী ছবি)নাম, বাবার নাম, এপিক নম্বর হুবহু এক। আলাদা শুধু ছবি, বয়স আর ঠিকানা। এমনই অদ্ভুত সমস্যায় পড়েছেন বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রী। নিউ আলিপুরের সাহাপুর মথুরানাথ বিদ্যাপীঠের গ্রুপ C কর্মী সুব্রতর অভিযোগ, তাঁর এনুমারেশন ফর্ম চলে গেছে সোনারপুর উত্তরের সুব্রত মিস্ত্রী নামে অন্য ভোটারের কাছে।
আসলে সরকারি স্কুলে কাজ করার সুবাদে প্রতিটা ভোটে ডিউটিতে যান সুব্রত। কিন্তু এ বার তাঁর কাছেই আসছিল না SIR-এর ফর্ম। পরবর্তীতে অনলাইনে দেখেন তার বাড়ির ঠিকনা বদলে গিয়েছে। কিন্তু এপিক নম্বর এক। শুধু তাই নয়, তিনি অনলাইনে দেখেন যে এখন তিনি নাকি সোনারপুর উত্তরের ভোটার!
সুব্রত মিস্ত্রী বলেন, 'আমার কাছে SIR-এর ফর্ম আসেনি। আমি চেক করতে গিয়ে দেখলাম আমার নামটা সোনারপুর উত্তরে চলে গেছে। আমি তো বেহালা পূর্বের ভোটার। তারপর জানতে পারলাম আমার ফর্মটি নাকি সেবিকা মিস্ত্রি নামে কেউ একজন নিয়ে গেছেন। BLO আমাকে জানালেন যে কোনও একটি গন্ডগোল হয়েছে। BLO নিজে কিন্তু আমার কাছে বলেছেন যে সেই ব্যক্তি (সোনারপুরের সুব্রত মিস্ত্রী) একজন দালালের মাধ্যমে এই ভোটার কার্ডটি বানিয়েছেন। তিনি একজন বাংলাদেশি।'
গোটা ঘটনায় এখন প্রবল চিন্তায় পড়েছেন বেহালার বাসিন্দা সুব্রত মিস্ত্রীর পরিবার। অভিযোগকারী সুব্রত মিস্ত্রী বলেন, 'আমি সত্যিই খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কী হবে কিছুই জানি না। প্রতিবছর আমি ভোটের ডিউটিতে যেতাম। যে কারণে বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারিনি। গতকাল আমি কমিশনে যাই বেহালা পূর্বের অফিসে। তারা সেখানে বলেন, আপনার নামটি সোনারপুর উত্তরে নথিভুক্ত হয়ে আছে। আমরা এখান থেকে কিছু করতে পারব না। তো আমি সত্যিই হয়রান হচ্ছি। কমিশন আমাকে সাহায্য করছে না। আমি থানায় গিয়েছিলাম তারাও আমাকে সাহায্য করছে না।'
সোনারপুরের সুব্রত কী বলেন?
এই প্রসঙ্গে সোনারপুরের উত্তরের ভোটার সুব্রত মিস্ত্রি বলেন, 'এই কার্ডটা ২০১৭ সালে করা হয়েছে। ক্য়ানিং থেকে করা হয়েছে...'
তিনি যে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, সেই কথাটা স্বীকার করে নেন সোনারপুরের সুব্রত। তিনি বলেন, ' হ্য়াঁ আমার জন্ম বাংলাদেশে। আমি এখানে ছোটবেলায় চলে এসেছি।'
এই কার্ড কাকে দিয়ে বানান হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'কাউকে দিয়ে না। আমরা বিডিও-র থেকে জমা করে করা হয়েছে।'
গন্ডগোল যে হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন BLO সমীরণকুমার রায়। তিনি বলেন, 'হঠাৎ করে বেহালা থেকে ওই ব্যক্তি আমাকে ফোন করেছিলেন। উনি বললেন যে আমার ফর্মটা আপনার কাছে আছে। তারপর আমি রেজিস্টার খুলে দেখি ফর্মটা অলরেডি উঠে গেছে। আমি আবার সুপারভাইজারকে জানাই। উনি বললেন যে ফর্মটা আপনি হোল্ড করুন।'