গত তিনদিন ধরে উত্তপ্ত রয়েছে সন্দেশখালি। পরিস্থিতি সামল দিতে জারি আছে ১৪৪ ধারা। ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৮ জনকে। এবার সন্দেশখালিতে মহিলাদের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য ১০ সদস্যের দল গঠন করল রাজ্য পুলিশ। দলের মাথায় থাকবেন ডিআইজি পদমর্যাদার এক জন মহিলা অফিসার। সোমবার এ কথা জানান বারাসতের ডিআইজি সুমিত কুমার। সন্দেশখালি থানায় সাংবাদিক বৈঠকে তদন্ত দলের কথা প্রকাশ্যে আনেন ডিআইডি বারাসত সুমিত কুমার। পুরো টিমের সদস্যরা মঙ্গলবার থেকে সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায়, পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে অভিযোগ শুনবেন।
সন্দেশখালি নিয়ে বিরোধীরা একের পর এক অভিযোগ তুলছে। তার মধ্যে রয়েছে অত্যাচার ও ধর্ষণের অভিযোগও। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে স্থানীয় শাসক দল তৃণমূলের নেতৃত্ব এবং পুলিশকে। কিন্তু পুলিশ জানাল, মহিলা নির্যাতনের কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি। সোমবার পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে জানান হয়েছে, মহিলা নির্যাতনের কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। তাঁদের কাছে লিখিত অভিযোগ যা এসেছে তাতে ধর্ষণের কোনও উল্লেখ নেই। পুলিশের তরফে জানান হয়েছে, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪টি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা। আরও লিখিত অভিযোগ এলে অবশ্যই তদন্ত করা হবে। ইতিমধ্যে একজন এসপি র্যাঙ্কের মহিলা অফিসার পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আশ্বস্ত করতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালেই সন্দেশখালিতে গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে ‘শ্লীলতাহানি’-র কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। তার পরেও মহিলাদের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য দল গঠন করেছে রাজ্য পুলিশ।
সন্দেশখালির পরিস্থিতি গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে এগিয়েছে, তাতে শিউরে উঠেছে রাজ্য। শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। আর এদিকে সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করেছে। এসবের মধ্যেই এবার সন্দেশখালি যাওয়ার তোড়জোড় নিচ্ছে তৃণমূল শিবির। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ১৪৪ ধারা উঠে গেলে আগামী রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্দেশখালিতে যেতে পারে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। তার আগে মঙ্গলবার সন্দেশখালির বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাবেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দুই বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ও নারায়ণ গোস্বামী। তৃণমূলের তরফে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোকে এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ১৮ জানুয়ারি অর্থাৎ রবিবার সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করতে পারে প্রশাসন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৪৪ ধারা ওঠার পর সেখানে ওইদিনই শান্তিসভা করবে তৃণমূল। সভায় থাকবেন পার্থ ভৌমিক, রথীন ঘোষ, নারায়ণ গোস্বামী, ব্রাত্য বসু, তাপস রায়, সুকুমার মাহাতো, নির্মল ঘোষ এবং সুজিত বসু। তাঁরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কোর কমিটির সদস্য।