শান্তিনিকেতনে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে বিজেপির অনুপম হাজরা। আর সেখান থেকেই বিশ্বভারতীর উপচার্যের বিরুদ্ধে 'বিজেপি সাজার' অভিযোগ তুললেন। অনুপম বলেন, 'নিজেকে বিজেপি প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন উপাচার্য(বিদ্যুৎ চক্রবর্তী)।' শুধু তাই নয়। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করছেন বলেও অভিযোগ করেন।
এদিন হঠাতই তৃণমূলের ধর্নামঞ্চের সামনে হাজির হন অনুপম। এরপর সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর রবীন্দ্রমূর্তিতে মাল্যদানও করেন বিজেপি নেতা।
ফলক বিতর্ক
সম্প্রতি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের শিরোপা পেয়েছে বিশ্বভারতী। আর সেই উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে একটি শ্বেতপাথরের ফলক বসানো হয়। তাতে লেখা 'ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট'। তবে এর পরে যা লেখা, তাই নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। নিচে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম লেখা ফলকে। আর সেটা দেখেই ভ্রু কোঁচকাচ্ছেন সমালোচকরা। ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই কেন? প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
তৃণমূলের ধরনা
এই ফলকের প্রতিবাদে শান্তিনিকেতনে কবিগুরু মার্কেটে-এ ধরনায় বসেছে তৃণমূল। আর মঙ্গলবার সেই ধরনা মঞ্চেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সমালোচনা করেন। তাঁর দাবি, নিজের কাজের মেয়াদ বাড়াতেই 'বিজেপি সাজার' চেষ্টা করছেন উপাচার্য। অনুপম হাজরার কথায়, 'এই ভিসি (উপাচার্য) ভণ্ড ভিসি। ইনি চেষ্টা করছেন বিজেপি সাজার। যাতে ওঁর কার্যকালের মেয়াদ বাড়ে, তাই এই চেষ্টা।'
কিন্তু তৃণমূলের মঞ্চে অনুপম কেন?
অনুপম বলেন, 'এটি তৃণমূল-বিজেপির ব্যাপার নয়। বাঙালির কাছে রবীন্দ্রনাথ আবেগের নাম। তাই দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ চাইছেন এই উপাচার্য না থাকুন।'
বিদ্যুৎ নন, বজ্রবিদ্যুৎ
অনুপম আরও বলেন, 'উনি বিদ্যুৎ নন। বিশ্বভারতীর বুকে বজ্রবিদ্যুৎ। কারণ, উনি যখন থেকে এসেছেন, শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা বন্ধ হয়েছে। উনি বসন্ত উৎসব বন্ধ করেছেন।'
তিনি বলেন, 'বোলপুরের মানুষ ওঁর উপর বিরক্ত। উনি নিজে বহিরাগত। না শান্তিনিকেতন সম্পর্কে ওঁর কোনও ধারণা আছে, না শান্তিনিকেতনের কোনও আবেগ বোঝেন। এমন মানুষ শান্তিনিকেতনের বুকে ভাইরাসের মতো। ওই উপাচার্য যাওয়ার পর শান্তিনিকেতনকে গোবরজল দিয়ে শুদ্ধ করব।'
আগামী ৮ নভেম্বর বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুতের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর আর তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না বলে দাবি করেন অনুপম হাজরা।