Dilip On Kunalরাজ্য রাজনীতির উত্তাপ আরও বাড়িয়েছে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ। যখন দলের প্রথম সারির নেতারা, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও সুকান্ত মজুমদার, দাবি করছেন, এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে রাজ্য থেকে ‘সওয়া কোটি অনুপ্রবেশকারীর নাম বাদ যাবে’, ঠিক তখনই দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সম্পূর্ণ বিপরীত মন্তব্য করেছেন।
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, 'অনুপ্রবেশকারীদের দেশে ঢোকার দায় সবারই আছে। পুলিশ ও বিএসএফ পয়সার জন্য এসব করে। বর্ডারে কাঁটাতার লাগাতে দেয়নি', নতুন বিতর্কের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে বহুবার অভিযোগ উঠলেও, এমন মন্তব্য একজন হেভিওয়েট নেতার মুখে বিরল। বিশেষত সেই সময়ে যখন শুভেন্দুরা তৃণমূলকে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে আক্রমণ করছেন, দিলীপ ঘোষের মন্তব্য দলের অন্দরে অস্বস্তি তৈরি করেছে।
এছাড়া, বিএসএফের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের, যা অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন। তাই দিলীপ ঘোষের মন্তব্য সরাসরি কেন্দ্রের ভূমিকার ওপরও প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূল শিবিরে এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'আমরা যা এতদিন ধরে বলছিলাম, তা বিজেপির প্রবীণ নেতা স্বীকার করে নিলেন। এরপর কী বলার থাকতে পারে?'
গত কয়েক বছরে তৃণমূল বারবার অভিযোগ করেছে, রাজ্যে অনুপ্রবেশ ঘটলে তার দায় বিএসএফের, কারণ সীমান্ত নিরাপত্তা পুলিশের অধীনে নয়। এই যুক্তি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি নিছক একটি মন্তব্য নয়; বরং বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে মতান্তরের প্রকাশ। গত কয়েক মাসে দিলীপ ঘোষ বারবার দলের নীতি, সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের বিভাজন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এসআইআর ইস্যুতে বাংলার রাজনৈতিক আবহ ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত। একদিকে বিজেপি কয়েক কোটি ‘অবৈধ ভোটার’-এর কথা বলছে, অন্যদিকে তৃণমূল দায় কমিশন ও কেন্দ্রের ওপর চাপাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে। বঙ্গ বিজেপিতে প্রশ্ন ওঠেছে, এটি কি অসাবধানতা নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে দলের নীতির বিরোধিতা?