পাকিস্তানে আটক জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন বিএসএফ আধিকারিকরা। রবিবার হুগলির রিষড়ায় জওয়ানের বাড়ি পৌঁছান তাঁরা। সেখানে জওয়ান পর্ণব কুমার সাউকে ফিরিয়ে আনতে সমস্ত প্রচেষ্টার আশ্বাস দেন তাঁরা। জওয়ানের বাবা ভোলানাথ সাউ এবং স্ত্রী রজনী সাউ জানান, বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে কথার পর কিছুটা আশ্বস্ত বোধ করছেন তাঁরা। তবে স্বাভাবিকভাবেই, যতক্ষণ না ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে, নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না।
এদিন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-ও জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন।
জওয়ানের স্ত্রী রজনী সাউ সন্তানসম্ভবা। শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল। কিন্তু তাঁর মানসিক জোর দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন সকলেই। এমন পরিস্থিতিতেই তিনি স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে সমস্ত প্রচেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। এর জন্য তিনি পরিবার-সহ প্রথমে চণ্ডীগড় যাবেন বলে জানিয়েছেন। তারপর তাঁরা পাঠানকোট যাবেন। তবে, বাবা ভোলা নাথ সাউ জানালেন যে, বিমানের টিকিট এখনও কনফার্ম হয়নি। তাই পাঠানকোট যাওয়ার পরিকল্পনা এখনও ফাইনাল হয়নি।
বিএসএফ অফিসাররাও পরিবারের অদম্য মনোবলের প্রশংসা করেন। তাঁরা জওয়ানের বাবা এবং স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের আশ্বাস দেন। তাঁরা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিএসএফ জওয়ানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় কোনও খামতি রাখছে না।
সোমবারের ফ্লাইটেই চণ্ডীগড় যাওয়ার পরিকল্পনা জওয়ানের পরিবারের। এরপর তাঁরা পাঠানকোট বিএসএফ সদর দপ্তরে যাবেন। এই পাঠানকোট দফতরেই পর্ণব কুমার সাউয়ের পোস্টিং ছিল। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার আবেদন জানাবেন।
পরিবারের সাথে দেখা করতে আসেন বিজেপি সাংসদ
বিজেপি নেতা এবং ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংও রিষড়ায় এসেছিলেন। আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, 'ভারত সরকার যখন উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে ফিরিয়ে আনতে পারে, তাহলে ওঁকে কেন পারবে না?' তিনি আরও জানান যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে
প্রসঙ্গত, বিএসএফ-এর ১৮২ ব্যাটালিয়নের হেড কনস্টেবল ছিলেন পর্ণব কুমার সাউ। কৃষকদের বর্ডারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময়েই তাঁরা ভুলবশত পাকিস্তানের দিকে প্রবেশ করে ফেলেন। এরপরেই সেদেসের রেঞ্জারদের হাতে ধরা পড়েন। বিএসএফ জওয়ান ইউনিফর্ম পরেই ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সার্ভিস রাইফেলও ছিল।
এই ঘটনার পর, বিএসএফ তাদের জওয়ানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করে। অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও, পাকিস্তান রেঞ্জার্স এখনও তাঁকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কোনও মন্তব্যই করেনি।
বিএসএফ পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকের জন্যও বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু প্রতিবারই কোনও উত্তর দেয়নি পাকিস্তান। তবে প্রচেষ্টা জারি আছে। সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বিএসএফ-এর উচ্চপদস্থ অফিসাররা। খুব শীঘ্রই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন বিএসএফ আধিকারিকরা।