দাড়িভিটে দুই ছাত্রর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনার মামলায় নতুন মোড়। তদন্তের ভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্তের দায়িত্ব পেল এনআইএ (NIA)। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের অভিযোগ ছিল। তাই তদন্তভার দেওয়া হল এনআইএর হাতে। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
৫ বছর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটের স্কুলে বিজ্ঞান ও বাংলার শিক্ষকের দাবিতে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে৷ সেই সময় গুলিতে মৃত্যু হয় দুই ছাত্রের, নাম তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকারের। মৃতদের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই দুই ছাত্রের৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ প্রশাসন৷ কিন্তু ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় নিহতদের পরিবার।
প্রসঙ্গত ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুলে গুলিকাণ্ডে গত এপ্রিলেই সিআইডি তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। শুনানিতে বিচারপতি বলেছিলেন, ওই ঘটনার তদন্ত শেষ করতে সিআইডির চার বছর কেন সময় লাগল? আদালত টাই জানতে চায়। তদন্তের কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি। সিআইডির কাজে একেবারেই খুশি ছিল না আদালত। তাই রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরের হাতে এই তদন্তের ভার আর নাও থাকতে পারে বলে মনে করেছিলেন অনেকেই, এবার সেটাই সত্যি হল। এই ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব পেল এনআইএ (NIA)।
সিআইডির পাশাপাশি হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও। গোটা ঘটনাক্রম থেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে আদালতের মন্তব্য, ‘দূর থেকে গোটা ঘটনাক্রম দেখছে। তারা জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে এতটাই ভরসা করে যে তাঁদের থেকে রিপোর্ট চেয়েই দায়িত্ব সেড়েছে। এটাই তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার জন্য যথেষ্ট। ২০২০ সালে না হয় কমিশনের সদস্য ছিল না। কিন্তু ২০১৮ থেকে দু বছর কি করেছে রাজ্য কমিশন? সেই তুলনায় জাতীয় কমিশন সেখানে লোক পাঠিয়ে পরে সেটি থেকে একটা রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাদের সেই রিপোর্ট নিয়ে যতই বিতর্ক হোক। তবু তারা সেটা করেছে। প্রশ্ন ওঠে রাজ্য কমিশন কী করছিল?’ এর আগে , এই ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করে সিবিআই তদন্তের পক্ষে সুপারিশ করেছিল।