আরজি করের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। তদন্তে সন্দীপ এবং অভিজিৎ সহযোগিতা করছেন না বলে আদালতে জানাল সিবিআই। প্রশ্নের জবাব এড়াচ্ছেন দুই অভিযুক্ত, এমন কথাই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্দীপের নার্কো টেস্ট এবং অভিজিতের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানোর আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। সোমবার এই নিয়ে শুনানি হতে পারে আদালতে। অন্য দিকে, ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্দীপ-অভিজিৎকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, দুই অভিযুক্তের কল রেকর্ড থেকে প্রত্যেকটি ফোন নম্বর ধরে ধরে তথ্য যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে। দুই অভিযুক্তের প্রতিটি ফোন কল খতিয়ে দেখা দরকার। অভিযুক্তরা কোনও ষড়যন্ত্রে যুক্ত রয়েছেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফোন কল ডিটেলস খতিয়ে দেখা দরকার। সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে কোনও ষড়যন্ত্রে সন্দীপ-অভিজিৎ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর।
কলকাতার আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই ক্ষোভের মুখে পড়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ। পরে এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। তারপর থেকেই সিবিআইয়ের স্ক্যানারে ছিলেন সন্দীপ। টানা প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে সন্দীপকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্দীপের পলিগ্রাফ পরীক্ষাও করানো হয়। শেষমেশ, দুর্নীতির অভিযোগে সন্দীপকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তারপরে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেও গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। গ্রেফতার করা হয় টালা থানার ওসি অভিজিৎকে। এই ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে।
গতকাল সন্দীপ এবং অভিজিৎকে আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয় যে, টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আরজি কর হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজও। বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। দু'জনের ফোন কল ডিটেলসও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
অন্য দিকে, আরজি করকাণ্ডে অবশেষে শনিবার থেকে কাজে ফিরলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে আংশিক কর্মবিরতি চলবে। আজ থেকে জরুরি পরিষেবায় যোগ দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পাশাপাশি, আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার ১১ দিনের মাথায় স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না তোলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দুপুরে স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতর পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। শুক্রবার কলকাতায় মশাল মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তায় মশাল হাতে হাঁটেন বহু সাধারণ মানুষ। যোগ দেন খ্যাতনামীরাও। মশাল মিছিলে যোগ দেন নির্যাতিতার পরিবারও।