 ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ, কী জানাল কমিশন?
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ, কী জানাল কমিশন?২০০২ সালের ভোটার তালিকা পরিবর্তন এবং ভোটারদের বাদ দেওয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ খারিজ করল নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা আপগ্রেড করা হয়নি। সার্ভার আপগ্রেড করা হবে দ্রুত। রাজ্যে ভোটার তালিকার এসআইআর বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন শুরু হওয়ার আগেই বহু ভোটারের নাম তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এনিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এবং রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। চন্দ্রিমার অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষের মনে ভয় তৈরি করা হচ্ছে। কুণালের অভিযোগ, চুপিচুপি বাদ দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের নাম। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁরা ছিলেন, কমিশনের সাম্প্রতিক আপলোডে তাঁদের অনেকের নাম আর নেই।
কুণালের দাবি, কোচবিহার বিধানসভার নাটাবাড়ির বুথ নম্বর ২-এর পুরনো তালিকায় ছিল ৭১৭টি নাম। কিন্তু এখন কমিশনের সাইটে একই বুথের ২০০২ সালের তালিকায় দেখা যাচ্ছে মাত্র ১৪০টি নাম। ৭১৭ থেকে ১৪০ হয়ে গেল কীভাবে? বাকিরা গেল কোথায়? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। আরও উদাহরণ দিয়ে কুণাল বলেন, একাধিক জেলার বহু বুথেই একই গরমিল ধরা পড়েছে। মাথাভাঙার ৬০ নম্বর বুথের কথাও বলেছেন তিনি। সেখানে ২০০২ সালের তালিকায় ছিল ৮৪৬ জনের নাম। কমিশনের ওয়েসবসাইটে ২০০২ সালের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ৪১৬ জনের নাম রয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০০২ সালের তালিকায় অশোকনগর বিধানসভার ৬১ নম্বর বুথের ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর ক্রমিক সংখ্যার ভোটারের নাম নেই।
কমিশনকে নিশনা করে কুণাল ঘোষের অভিযোগ, 'এটা কাকতালীয় নয়, এটা পরিকল্পিত। আগে থেকেই বিজেপির নেতারা বলছিলেন বহু মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে। তারা আগে জানল কী করে? কারা জানিয়েছে ওদের? বিজেপির অফিসে বসেই এই চক্রান্ত হয়েছে, আর সেই চক্রান্ত বাস্তবায়ন করছে নির্বাচন কমিশন।'
এদিকে, তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল। তিনি বলেন,'কিছু লোক জানেন না যে ইসিআই ওয়েবসাইটটি এনআইসি দ্বারা হোস্ট করা হয়েছিল এবং এটি ভারত সরকারের অধীনে। ভারত সরকার সার্ভার আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করার জন্য আমরা অর্থ এবং সকলের অনুমোদন নিয়েছি। সব কিছু আপগ্রেড করা হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে ট্রান্সফার প্রক্রিয়া করা হবে। ৫ নভেম্বর থেকে ফর্ম জমা দেওয়া শুরু হবে। তার আগে আপগ্রেড করা হবে।'
এদিকে কমিশন আরও জানিয়েছে, ৪ নভেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হবে গণনা ফর্ম (Enumeration Form) বিতরণ এবং সংগ্রহের কাজ। চলবে ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। গণনা পর্বে (Enumeration Phase) পূরণ করা গণনা ফর্ম (Enumeration Form) সই করে জমা করলেই খসড়া ভোটার তালিকায় নাম উঠবে। এই পর্বে ফর্মের সঙ্গে কোনও নথি জমা করার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র খসড়া তালিকা প্রকাশের পর নোটিশ জারি হলে সেই অনুযায়ী গণনা ফর্মে (Enumeration Form) উল্লিখিত যে কোনও নথি জমা করা প্রয়োজন।