বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে কলকাতায় গর্জে উঠল সনাতনী সমাজ। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ এবং চিন্ময়ের নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে কলকাতায় বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণের মিছিল ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড ঘটল। বেকবাগানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যদের। পুলিশের ব্যারিকেড মিছিল আটকালেই উত্তেজনা ছড়ায়। এক জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি। অন্য দিকে, তাঁদের ২ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ।
এদিন শিয়ালদা থেকে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের দফতর পর্যন্ত মিছিল করে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। মিছিল বাংলাদেশে ডেপুটি হাই কমিশনের দফতরের দিকে এগোতেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের ব্যারিকেড মিছিল আটকালেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যদের মধ্যে বচসা-ধস্তাধস্তি বাধে। পরে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের ৫ সদস্য কমিশনের দফতরে যান।
চিন্ময়কৃষ্ণকে নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল রাজপথে নেমেছিল বিজেপি। রবীন্দ্র সদন থেকে বাংলাদেশে ডেপুটি হাই কমিশনের দফতর পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপি নেতারা। মিছিল শেষে হাই কমিশনে যান শুভেন্দু অধিকারী-সহ কয়েক জন বিজেপি বিধায়ক। কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। ভিসা বন্ধের আবেদন জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। বলেছেন, 'ভিসা দেওয়া বন্ধ করুন।ভারত বিরোধী কথা বলা বন্ধ করুন।' বিজেপি নেতার কড়া হুঁশিয়ারি, 'চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি আর লাহোর যান, এখানে আসবেন না।'অন্য দিকে, চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজ্যের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। রানাঘাট, কাকদ্বীপ, কৃষ্ণনগরে প্রতিবাদের ছবি ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশের ঘটনায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'বাংলাদেশ রাজ্যের বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক বিষয়। যে কোনও আন্তর্জাতিক বিষয়ে যে অবস্থান কেন্দ্র সরকার নেবে, সেটাকে দেশের স্বার্থে দলগত ভাবে সমর্থন করবে তৃণমূল।' এরপরেই অভিষেক বলেন, 'যে ঘটনা ঘটেছে, তা একেবারে সমর্থনযোগ্য নয়, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়।'
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসীকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন না জানানোয় সন্ন্যাসীকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন সে দেশের হিন্দুদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, যাতে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।' হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথাও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।