সন্দেশখালির ঘটনার পর বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। এই নিয়ে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার বহরমপুরের সাংসদ বলেছেন, 'বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা থাকলে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দেখাক।' পাশাপাশি তৃণমূল-বিজেপির আঁতাঁতের ইঙ্গিত দিয়ে অধীর বলেছেন, 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে এরকম পদক্ষেপ করার ক্ষমতা আছে বিজেপির?' এর পাল্টা অধীরকে 'বিজেপির দালাল' বলে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
ঠিক কী বলেছেন অধীর?
শুক্রবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, 'রাজ্যে সাংবিধানিক কাঠামো যে ভেঙে পড়েছে, তা রজ্যপাল এখনও কেন ঘোষণা করছেন না?' ঘটনাচক্রে এই মন্তব্যের পর পরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সন্দেশখালিকাণ্ডে নিন্দায় সরব হন। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হলে সংবিধান তার মতো পদক্ষেপ করবে।' বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব সন্দেশখালির ঘটনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়েছেন। শাহকে মেল করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই আবহে আবার চর্চায় এসেছে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রসঙ্গ। আর এই নিয়ে শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, 'রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ক্ষমতা থাকলে করে দেখাক না বিজেপি। বলছি তো রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা জরুরি। কিন্তু করে তো দেখাক। কবে হবে? পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ক্ষমতা যদি কেন্দ্রের থাকে, তা হলে এখনই করুক। মণিপুরে করুক, পশ্চিমবঙ্গে করুক। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করার ক্ষমতা কোথায় আছে বিজেপির? কোথায় বিজেপির পালোয়ানি?'তৃণমূল-বিজেপির আঁতাঁতের তত্ত্ব তুলে ধরে অধীর আরও বলেছেন, 'অন্দর কি বাত কুছ অলগ হ্যায়। ভিতরে অনেক তত্ত্ব রয়েছে।'
অধীরের এই বক্তব্যের পাল্টা সরব হয়েছেন কুণাল। তিনি বলেছেন, 'বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে তৃণমূল। আপনার (অধীর) নেতৃত্বে রাজ্য কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শূন্য পেয়েছে। বিজেপির দালাল। সনিয়াজি,রাহুলজি মমতাদির সহযোগিতা চাইছেন। আপনি 'ইন্ডিয়া' জোটের স্পিরিট নষ্ট করছেন। বিজেপিকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, এই দালালিটা করছেন অধীর চৌধুরী।'
অন্য দিকে, সন্দেশখালির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন অধীর। বলেছেন, 'এই বাংলায় নিরাপদ নন কেউ। সন্ত্রাস ছাড়া নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই। সন্ত্রাস এখন তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গেও হচ্ছে। ভূ-ভারতে কোথাও হয়েছে কি না জানা নেই। মুখ্যমন্ত্রীও নিশ্চুপ। যা অনেক কিছু মানে করছে। অনেক কিছু ব্যাখ্যা করছে। এটা স্পষ্ট করছে বাংলায় যা কিছু ঘটছে, সব কিছুর নেপথ্যে যাদের সমর্থন তারা বাংলার শাসকদল।'