আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই কর্মসংস্থানের বার্তা দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। জানা যাচ্ছে, এবার পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে নবান্ন। সূত্রের খবর, উৎসবের মরসুম শেষ হতেই কনস্টেবল পদে নিয়োগ শুরু করবে রাজ্য সরকার। আর সেই পরীক্ষায় প্রথমবার বসতে পারবেন সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ এবং অন্যান্য সহযোগী পুলিশকর্মীরা। তাঁদের জন্য থাকছে বিশেষ কোটা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সহযোগী পুলিশকর্মীদের জন্য কনস্টেবল নিয়োগে ১৫ শতাংশ কোটা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ বয়সসীমা রাখা হয়েছে ৩৫ বছর। ফলে বহু বছর ধরে সিভিক বা ভিলেজ পুলিশ হিসাবে কাজ করা কর্মীরাও এবার স্থায়ী চাকরির সুযোগ পাবেন।
নিয়ম অনুযায়ী, সহযোগী পুলিশকর্মীরা সরাসরি কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতেন না। এর ফলে অসন্তোষ জমেছিল বহু তরুণ-তরুণীর মধ্যে। অনেকেই অস্থায়ী পদে থেকে স্থায়ী নিয়োগের সুযোগ না পেয়ে হতাশ হয়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা ভেবে ফেলেছিলেন। নবান্নের এই নতুন সিদ্ধান্ত তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি মেটাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কমিটি দীর্ঘদিন ধরে সহযোগী কর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, তাঁদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে যাতে কর্মীরা কাজের ফাঁকে বাড়ি থেকেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন। ইতিমধ্যেই সেই প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছে।
ওয়েলফেয়ার কমিটির এক কর্তার কথায়, “সহযোগী কর্মীরা এতদিন নানা দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। এবার তাঁদের জন্য স্থায়ী চাকরির দরজা খুলছে। আমরা চাই, যত বেশি সম্ভব কর্মী এই সুযোগ কাজে লাগান।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই সিদ্ধান্তে শাসক দল এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে, একদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, অন্যদিকে নির্বাচনের আগে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়া। নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত হতে পারে এই কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা, যেখানে অন্তত ৫ হাজার সহযোগী কর্মী বসবেন বলে অনুমান।
সব মিলিয়ে বলা যায়, শুধু রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর ভবিষ্যৎ নয়, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রাজনীতিতেও এই সিদ্ধান্ত বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।