দ্যুতিমান ভট্টাচার্য কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি থামাতে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কোচবিহার সেই পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে বদলি করল নবান্ন। তাঁকে পঠানো হয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (SAP) থার্জ ব্যাটেলিয়নের কমাডান্ট পদে। দ্যুতিমানের পরিবর্তে কোচবিহারের নতুন SP করা হয়েছে সন্দীপ কররাকে।
ঠিক কী ঘটেছিল কালীপুজোর রাতে?
দীপাবলির রাতে শব্দবাজির তাণ্ডব চলছিল। আর সে কারণে শিশু, মহিলা সহ বেশ কয়েকজনের উপরে লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছিল কোচবিহারের SP দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কালীপুজোর রাতে SP-র পরনে ছিল হাউ প্যান্ট এবং স্যান্ডো গেঞ্জি। মাথায় ছিল ফেট্টি এবং হাতে ডান্ডা। কার্যত 'রাউডি' লুকে দেখা গিয়েছিল ওই অফিসারকে। এক স্কুল শিক্ষক, মহিলা এমনকী শিশুকেও ডান্ডা দিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কোচবিহার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রেলঘুমটি এলাকায় পুলিশ সুপারের বাংলো। জানা যায়া, কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ শুনেই বাংলো থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। সে সময়ে তাঁর সঙ্গে কোনও মহিলা পুলিশ আধিকারিক ছিলেন না। অভিযোগ, মহিলা পুলিশ আধিকারিক ছাড়াই মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে।
দ্যুতিমানের বক্তব্য
যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন দ্যুতিমান। তাঁর দাবি ছিল, গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটছিল তাই নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিয়েছিল মাত্র। তিনি বলেছিলেন, 'আমরা ভেবেছি এই শেষ হবে, এই শেষ হবে। কিন্তু রাত ১০টা বেজে গেল, ১১টা বেজে গেল বাজির দাপট থামেনি। ১টা পর্যন্ত বাজি ফাটছে। আমার স্ত্রী কাউন্ট করেছে, একসঙ্গে ৬০টি বাজি ফেটেছে। আমার কুকুরগুলো চিৎকার করে পাগল হয়ে যাচ্ছিল। তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা গিয়ে বারণ করে এসেছিল।'
কেন ট্রান্সফার?
তবে এই ঘটনা চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। তারপরই প্রকাশিত হয় নবান্নের বিজ্ঞপ্তি। যেখানে উল্লেখ করা হয় কোচবিহারের নয়া SP সন্দীপ কাররা। তিনি আগে ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের DC পশ্চিম পদে। সেই পদে পাঠানো হয়েছে সোনওয়ানে কুলদীপ সুরেশকে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা বিভাগের (IB) সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট পজে ছিলেন।
তবে দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের আচমকা ট্রান্সফারের কারণ খোলসা করেনি নবান্ন। বলা হয়েছে, এটা রুটিন বদলি। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, 'রাউডি' সেজে মারধরের ঘটনার কারণেই তাঁকে সরিয়েছে রাজ্য।
কালীপুজোর রাতের ওই ঘটনা এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লেখেন, 'অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় মহিলা এবং শিশুদের মারধর করছেন পুলিশ সুপার।'