
বঙ্গোপসাগরের ওপর তৈরি হয়েছে একটি নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল, যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর (IMD)। আন্দামান উপকূলের কাছে গঠিত এই সিস্টেমটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে ‘ঘূর্ণিঝড় মন্থা’ (Montha) নামে রূপ নিতে পারে। এই নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড, যার অর্থ ‘ফুল’।
আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি নিম্নচাপ অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে। এটি বর্তমানে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং শনিবারের মধ্যে নিম্নচাপে, রবিবার গভীর নিম্নচাপে এবং সোমবার সকাল নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি এখনও ভূমি থেকে অনেক দূরে থাকলেও, এর প্রভাব ২৬ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং ঝাড়গ্রাম, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বৃষ্টি সবচেয়ে বেশি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বর্তমানে কলকাতায় বজ্রপাত ও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও, ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হলে পূর্বাভাস আরও পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের প্রধান এইচ.আর. বিশ্বাস।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই সিস্টেমের বাতাসের গতিবেগ রবিবার রাত নাগাদ ঘণ্টায় প্রায় ৫৬ কিলোমিটার, এবং সোমবারের মধ্যে তা ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরের বর্তমান ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস সমুদ্র তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য উপযুক্ত। তবে ঝড়টি ঠিক কোন দিকে অগ্রসর হবে, ভারতীয় উপকূল নাকি বাংলাদেশের দিকে, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, জেলেদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। ২৮ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের সমুদ্র এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অক্টোবর-নভেম্বর সময়কালকে বর্ষা-পরবর্তী ঘূর্ণিঝড় মরশুম হিসেবে ধরা হয়। গত বছর এই সময়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়েছিল, যার প্রভাবে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। এবার ‘মন্থা’ সেই ধারাবাহিকতায় নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।