মে মাস ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বরাবরই কুখ্যাত। আয়লা, আমফানের মত বিধ্বংসী ঝড়গুলি এই সময়েই বাংলাকে তছনছ করে দিয়েছিল। আর এবারও ঘূর্ণিঝড়ের এক নতুন আশঙ্কা গ্রাস করছে বঙ্গবাসীকে। বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যার জেরে জন্ম নিতে পারে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’।
কবে ও কোথায় আছড়ে পড়তে পারে শক্তি?
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১৬-১৮ মে-র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে। সেটি ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে ২৪ থেকে ২৬ মে-র মধ্যে। তারপর এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশা উপকূল থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যে যেকোনও জায়গায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘শক্তি’, কে দিল এই নাম?
এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়া সংস্থাগুলি পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে এবং সেই তালিকা অনুযায়ী এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হতে চলেছে ‘Shakti’ বা ‘শক্তি’।
আবহাওয়া দফতর কী বলছে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত ‘শক্তি’ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “অনেক সময় সংবাদমাধ্যম আতঙ্ক ছড়ায়। তবে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা নিয়ে কিছু আগে থেকে বলা যায় না।”
বর্ষার আগমন এবং ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা
এদিকে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ দিন আগেই বর্ষা ঢুকে পড়েছে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আন্দামান ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করেছে। পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই মৌসুমী বায়ু ঢুকে পড়বে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে। এই আবহেই ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’-র সম্ভাবনা ঘনীভূত হচ্ছে।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি জরুরি
যদিও এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, তবুও পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করা হতে পারে, পাশাপাশি উপকূলবর্তী অঞ্চলে ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হতে পারে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
আপাতত ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি না হলেও, মে মাসের ইতিহাস মাথায় রেখে সচেতন থাকা ছাড়া উপায় নেই। রাজ্যবাসী এখন তাকিয়ে আবহাওয়াবিদদের পরবর্তী আপডেটের দিকে।