Cyclone Asani Update: ইতিমধ্যে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ সহও বৃষ্টি হচ্ছে। অশনির ল্যান্ডফল কোথায় তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অশনির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বাংলা।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় অশনি রবিবার সন্ধ্যায় আরও তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) অনুযায়ী, স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলেও, আগামী দু' দিনের মধ্যে অশনি এই রাজ্যগুলির উপকূলীয় জেলাগুলিকে ঘিরে ফেলতে পারে।
মঙ্গলবার ১০ মে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলে পশ্চিম-মধ্য এবং সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছনোর পরে, ঘূর্ণিঝড় অশনি ওড়িশা উপকূলে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মরসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় অশনি।
অশনি নিয়ে রইল আপডেট?
১. আইএমডি ডিরেক্টর-জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব উপকূলে সমান্তরালভাবে অগ্রসর হবে। মঙ্গলবার সন্ধেয় থেকে বৃষ্টিপাত ঘটাবে। বঙ্গোপসাগরের সিস্টেমের প্রভাবে, ১২ মে পর্যন্ত বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে বজ্রঝড়, বজ্রপাত এবং হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
২. মঙ্গলবার এবং বুধবার ভারী বৃষ্টির (২৪ ঘণ্টায় ৬৪.৪ মিমি থেকে ১১৫.৫ মিমি) পূর্বাভাসের আগে ওড়িশাকে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার গজপতি, গঞ্জাম এবং পুরীর কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পরের দিন, গঞ্জাম, খুরদা, পুরী, জগৎসিংহপুর এবং কটকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার পুরী, জগৎসিংহপুর, কটক, কেন্দ্রপাদা, ভদ্রক এবং বালাসোরে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
৩. ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি সমুদ্রের অবস্থা ৯ মে ও ১০ মে উত্তাল হবে৷ ১০ মে সমুদ্রে বাতাসের গতিবেগ ৮০-৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় বাড়বে৷ এই বাতাসের অবস্থা ১১ মে পর্যন্ত বিরাজ করবে এবং তারপরে হ্রাস পাবে৷
৪. ওড়িশায় এনডিআরএফ, ওডিআরএএফ এবং ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলগুলি প্রস্তুত রয়েছে।
৫. আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কোনও জরুরী পরিস্থিতি দেখা দিলে ১৮টি জেলার মোট ৭.৫ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৬. ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে, রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলিতে দু- একটি জায়গায় ভারী বর্ষণ হতে পারে, আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
৭. জেলা প্রশাসন মন্দারমণি, দিঘা এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য জনপ্রিয় স্পটগুলিতে পর্যটকদের সমুদ্র থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছে।
৮. বাংলায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল, পুলিশ এবং কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে কলকাতাও, নাগরিক সংস্থা জলাবদ্ধ অঞ্চলগুলি নিষ্কাশনের জন্য পাম্পিং স্টেশনগুলিকে স্ট্যান্ডবাই রাখে, সেই সঙ্গে গাছ পড়লে এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি হলে ক্রেন, বৈদ্যুতিক করাত এবং আর্থমুভারগুলি রাখা হয়েছে।
৯. বাংলার পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তর ২৪ পরগণার প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় শেল্টার হোম, স্কুল এবং অন্যান্য পাকা বাড়িগুলিকে প্রস্তুত রাখছে। শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
১০. আবহাওয়া অফিস মৎস্যজীবীদের মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে এবং পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলে এবং তার বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।