সামনের বছরই বাঙালির প্রিয় পাহাড় শহর দার্জিলিং হতে চলেছে রাজ্যের সবথেকে দূষিত শহরের মধ্যে একটি। গবেষণায় এমনটাই তথ্য উঠে আসছে। কলকাতার বোস ইনস্টিটিউটের "অ্যাটমোস্ফিয়ারিক এনভায়রনমেন্ট" জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে দার্জিলিং-এর বায়ুর গুণমান নিয়ে লেখা হয়েছে। গবেষনায় দেখা গেছে। বাতাসের গুণমান কমছে দার্জিলিংয়ের। দূষণ বাড়ছে যেকারণে আগামী একবছরের মধ্যেই শৈল শহর হতে চলেছে বাংলার দূষিত জায়গাগুলির মধ্যে একটি।
অতি সূক্ষ্ম কণার বৃদ্ধির কারণে পিএম ১০-এর মাত্রায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাওয়া গেছে। দেখা গেছে যে ২০১৮ সাল থেকে পিএম ২.৫ এর মাত্রা ভারতের নির্ধারিত মাত্রা (৪০ মাইক্রোগ্রাম পার কিউবিক মিটার) ছাড়িয়ে গেছে। ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের কারণে ২০২৪ সালের মধ্যে দার্জিলিং বাংলার ৬টি অত্যন্ত দূষিত শহরের তালিকায় চলে যেতে পারে। বোস ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিকদের মতে, এই দ্রুতগামী দূষণ যদি আটকানো না যায়, তবে বাঙালির প্রিয় পাহাড় শহর খুব তাড়াতাড়ি একটি অতিদূষিত শহরে পরিণত হতে পারে। যে শহরগুলি পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের জাতীয় মানদণ্ড ধরে রাখতে অক্ষম।
উল্লেখ্য, আগেই রাজ্যের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল শৈলশহর দার্জিলিংয়ে পরিবেশ দূষণ চরমে উঠেছে বলে ক্ষুব্ধ জাতীয় পরিবেশ আদালত (এনজিটি ) নোটিস পাঠিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে৷ একই সঙ্গে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল, উত্তরবঙ্গের মহানন্দা নদী সংলগ্ন অঞ্চলের পরিবেশ দূষণ নিয়েও৷ এনজিটির পক্ষ থেকে দেওয়া নোটিসের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে এবং শিলিগুড়ি পুরসভাকেও৷ রাজ্য সরকারের বক্তব্যের পাশাপাশি এই সংস্থাগুলির আলাদা ব্যাখ্যাও চেয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত৷ এর আগে বার বার বলা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দার্জিলিংয়ের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর , দার্জিলিং শৈলশহরে যত্রতত্র ময়লা এবং আবর্জনা ফেলা এবং তা যথাসময়ে পরিষ্কার না -করার যে প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করা যাচ্ছে , তার বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত৷ দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে যে সব দোকানপাট , হোটেল এবং বাড়িঘর গড়ে উঠেছে , তার নির্মাণেও পরিবেশ দূষণের প্রভাব পড়ছে৷ সেই বিষয়েও এর আগে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত বলে অভিযোগ৷ প্রতি বছরে দার্জিলিংয়ে আসা ভ্রমণার্থীদের পাশাপাশি এই শৈলশহরের স্থায়ী বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণ যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে , সেই বিষয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।