রাতের কলকাতায় নামল আঁধার। মোমবাতির আলোয় অবিরত প্রতিবাদ। কলকাতা থেকে শহরতলিতে প্রতিবাদে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। অন্ধকারের মধ্যে টিমটিম করছে মোমবাতির আলো, জ্বলে উঠল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট। অদূর ভবিষ্যতে এমন দৃশ্য দেখেনি শহর তিলোত্তমা। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদে, চিকিৎসক, সাধারণ মানুষ থেকে টলি-টেলি পাড়া। আরজি করে প্রতিবাদ মঞ্চে এলেন তরুণীর পরিবার।
কলেজস্ট্রিট, শ্যামবাজার, আর জি কর, যাদবপুর, বারাসাত, সোদপুর সহ রাজ্যের কোণায় কোণায় দেখা গেল হাজার হাজার মানুষের মোমবাতি মিছিল। জেলায় জেলায়ও দেখা গেল একই ছবি। এদিন কলকাতার বহু রাস্তাতেও বন্ধ করা হয় আলো। একাধিক ব্রিজ, বড় রাস্তায় আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল, মোমবাতি মিছিল করে বিচারের দাবি তোলেন আন্দোলনকারীরা। আর জি করেও নিভে যায় আলো, মোমবাতির আলো জ্বলে ওঠে হাসপাতালে।
এদিন আর জি করে চিকিৎসকদের প্রতিবাদে উপস্থিত হন তরুণীর বাবা-মা, কাকা-কাকু, দাদারা। পুলিশ ও নির্যাতিতার বাড়ি সোদপুরের কাউন্সিলরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নির্যাতিতার পরিবার। বাবা প্রশ্ন তোলেন, "আমরা দেহ রেখে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ৩০০-৪০০ পুলিশ টালা থানা ঘিরে রেখেছিল। আমরা সেখান থেকে ফিরে যাই। দেহ দাহ করতে দিতে বাধ্য হই আমরা। শ্মশানের টাকাও নেওয়া হল না আমার থেকে। আমার মেয়ে জানল, বাপি এই টাকাটাও তোমরা পারল না? আমাদের সাদা পাতায় সই করানো হয়। সাংবাদিক বৈঠক করে বারবার মিথ্যা বলছে পুলিশ। আমরা দেহ রেখে দিতে চেয়েছিলাম, এত প্রেশার তৈরি করে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় মিথ্যে কথা বলছেন। ডিসি নর্থ আমাদের বাড়িতে এসে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমরা তার জবাব দিয়েছি।"
তরুণীর বাবা আরও বলেন, "হাসপাতালের তরফে কী ভাবে বলা হল, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন? সে দিন মেয়ের মুখ দেখতে আমাদের সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ওর মা ওদের হাতে-পায়ে ধরেছেন। কেন ময়নাতদন্ত করতে দেরি হল? রাত পৌনে ১২টায় কেন এফআইআর হল? পুলিশ কেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করল?"
ঘটনার দিন তরুণীর কাকিমাকে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন। বাবা-মা পৌঁছনোর আগে কীভাবে পুলিশ দেড় ঘণ্টা আগে পুলিশ দেহ নিয়ে এল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাশাপাশি নির্যাতিতার কাকিমার আবেদন করে কারও কাছে কোনও প্রমাণ থাকলে তা যেন সামনে আনা হয়।