কালীগঞ্জে দশ বছরের নাবালিকা তামান্না খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ক্রমেই বাড়ছে। বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বুধবার পুলিশ আরও এক অভিযুক্ত শরিফুল শেখকে গ্রেফতার করেছে। এই নিয়ে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পাঁচ। তারইমধ্যে মৃত বালিকার মাকে টাকা দিতে গিয়ে কার্যত বিব্রত হতে হলে তৃণমূল বিধায়ককে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত শিশুর পরিবার যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল, শরিফুল তাদের মধ্যে একজন। এদিন তামান্নার বাড়িতে যান ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীর। তবে তিনি তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়, এক অরাজনৈতিক মানবিক সংগঠনের তরফে গিয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। তিনি তামান্নার শোকগ্রস্ত মায়ের হাতে একটি টাকা ভর্তি খাম তুলে দিতে গেলে, তা স্পষ্টভাবে ফিরিয়ে দেন সাবিনা বিবি। তিনি বলেন, আমার জমি আছে, আমার বাড়ি আছে, টাকা নিতে আমি বাধ্য নই। আমি বিচার চাই, দয়া নয়।'
ঘটনার পরে পুলিশের তরফে কৃষ্ণনগর জেলার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে দাবি করেছিলেন, 'দুর্ঘটনাবশত বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।' এই মন্তব্যে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তামান্নার মা। তিনি বলেন, 'এটা পরিকল্পিত খুন। একে দুর্ঘটনা বলে চালানো যাবে না। পুলিশকে অনুরোধ করছি, তারা যেন সেই মন্তব্য প্রত্যাহার করে।'
সোমবারই কালীগঞ্জ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ বিপুল ভোটে জয়ী হন। তখনই শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা বিজয় মিছিল শুরু করেন। অভিযোগ, ওই মিছিল থেকেই সিপিএম কর্মী ও সমর্থকদের বাড়ির দিকে বোমা ছোড়া হয়। তখনই ঘটনাস্থলে ছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, সকেট বোমার আঘাতে সে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে।
অনেকের অভিযোগ, এই ঘটনা শুধু একটি শিশুর মৃত্যুই নয়, বরং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির আরেকটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হিসেবেই উঠে আসছে।