সকাল থেকেই শহর কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার আকাশের মুখ ভার। নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার সারাদিনই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে মেঘলা আবহাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তাও রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। এদিকে হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে নিম্নচাপটি।
মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, আগও উত্তরদিকে অগ্রসর হবে গভীর নিম্নচাপ। বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এটি। তারপর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক খেয়ে শুক্রবার সকালে ওড়িশা উপকূল বরাবর উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছে পৌঁছাবে। তারপর শনিবার বাংলাদেশ ও সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। এটি শুক্রবার দুপুরে পর থেকে ১৮ নভেম্বর শনিবার ভোর ৬টার মধ্যে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগে উঠে আসতে পারে। তখন বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় দমকা হাওয়াসহ ৬০-৮০ কিলোমিটার। সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা হতে পারে তিন থেকে পাঁচ ফুটের বেশি। আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, নিম্নচাপের কারণে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা রয়েছে এ রাজ্যে। উপকূলের ৩ জেলায় থাকবে দুর্যোগের আশঙ্কা। বেশি প্রভাব পড়বে সুন্দরবনে।
নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি রাজ্যে
নিম্নচাপের কারণে বুধবার বিকেল থেকেই হাওয়া বদল হয়েছে বাংলায়। উপকূল ও সংলগ্ন এলাকায় আজ আংশিক মেঘলা আকাশ থাকবে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি রয়েছে রাজ্যের উপকূল ও ওড়িশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে। শনিবার পর্যন্ত চলবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। রবিবার থেকে পারদ নামতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। কবে কোন জেলায় বৃষ্টি হবে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
সমুদ্র থাকবে উত্তাল
আবহাওয়া দফতরের তরফে বলা হয়েছে, ১৬ থেকে ১৮ নভেম্বর সময়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে সমুদ্র খুব উত্তাল থাকবে। আবহাওয়া দফতরের তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি। দমকা হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘন্টায় ৭০ কিমি। বিকেল নাগাদ যা বেড়ে হতে পারে ঘন্টায় ৫০-৬০ কিমি এবং ঘন্টায় ৭০ কিমি। ১৮ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত এমনটাই থাকবে। তারপর থেকে তা কমতে থাকবে। পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমানে মাঠে থাকা ফসলের ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
মৎস্যজীবী ও কৃষকদের জন্য সতর্কবার্তা
এই পরিস্থিতিতে বাংলার মৎস্যজীবীদের ১৫ নভেম্বরে বিকেলের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ থেকে ১৮ নভেম্বর মৎস্যজীবীদের উত্তর বঙ্গোপসাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের মত কৃষকদের জন্যও রয়েছে সতর্কবার্তা। উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে কৃষকদের জন্য এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। ধান কেটে নেওয়ার নেওয়ার পরামর্শ রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর আলু চাষের পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
সকাল থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা
নিম্নচাপের কারণে আজ সকাল থেকেই বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতা। সূর্যের মুখ এখনও অবধি দেখতে পায়নি শহর। দিন কলকাতা ও আশপাশের এলাকার আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। বুধবার যা ছিল ২১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪৬ শতাংশ। শুক্রবার পর্যন্ত শহরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। নিম্নচাপের জেরে তাপমাত্রাও বাড়বে। শনিবার সকাল থেকে সামান্য বদলাতে পারে পরিস্থিতি।