বিধানসভা নির্বাচনের আগে নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের মেগা কর্মীসভা। সেখান থেকে ইডি, সিবিআই সহ বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত গর্জে উঠলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে 'অভিষেক ব্যানার্জি' নামে জনৈক ব্যক্তির নাম রয়েছে। এই প্রসঙ্গ তুলে ইডি-সিবিআইকে তুলোধোনা দল সেনাপতি অভিষেকের।
বৃহস্পতিবার সিবিআই-ইডিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, "কাল খবরে দেখানো হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে। ২৮ পাতার চার্জশিট, দু'জায়গায় খালি আমার নাম লিখেছে। তাও অভিষেক কে, কোথায় তাঁর বাড়ি, কার ছেলে, সাংসদ নাকি পঞ্চায়েত প্রধান কোনও পরিচয় নেই। বিজেপি নেতারা যেমন ভাববাচ্যে কথা বলত, ইডি- সিবিআইও তাই বলছে।"
পাঁচ বছর আগের কথা তুলে এদিন তিনি আবারও বলেন, "২০২০ সালে বলেছিলাম আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ করতে পারলে, আদালতে যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতে কোনও ভুল বা দুর্নীতি হয়েছে। আমায় শমন, চার্জশিট দিতে হবে না। ফাঁসির মঞ্চ গড়ুন, গিয়ে মৃত্যুবরণ করব। আজও একই কথা বলছি, আপনার কাছে প্রমাণ থাকলে প্রমাণ দিন। এর আগে ১০ ঘণ্টা ইডির ডাকে গিয়েছিলাম তো নবজোয়ার থেকে যাত্রা বন্ধ করে এসেছি। কিন্তু কাঁচকলা। আমি অন্য ধাতুতে তৈরি। আমায় ধমকে চমকে লাভ নেই। আমায় যত প্রহার করবেন, যত আঘাত করবেন, আমি তত মানুষের কাছে যাব। মাথা নত করব।"
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় চার্জশিটে জনৈক 'অভিষেক ব্যানার্জি'র নাম পাওয়া যায়। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, সিবিআই ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি খারাপ করার চক্রান্ত করছে।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃতীয় চার্জশিট দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে 'অভিষেক ব্যানার্জি'র নাম রয়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তির পরিচয় সামনে আনেনি সিবিআই। চার্জশিটে লেখা রয়েছে, 'ইতিমধ্যেই যে সব বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তার জন্য অভিষেক ব্যানার্জি ৫০ কোটি টাকা চেয়েছিলেন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র জানায়, ওই প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই প্রত্যেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে। আর টাকা তিনি তুলতে পারবেন না। তখন অভিষেক ব্যানার্জি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে বলেন, অবিলম্বে ওই প্রার্থীদের নিয়োগ বন্ধ করো নাহলে দূরে কোথাও পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করো।'
শুধু তাই নয়, গোটা বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘সিবিআইয়ের এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ন্যারেটিভ আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানে ইচ্ছাকৃত ভাবে কালি ছেটানোর নিন্দনীয় প্রচেষ্টা।
ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে দলকে ছোট করছে। যারা এগুলো করছেন তাদের চিহ্নিত করা গেছে। মুকুল রায় শুভেন্দু অধিকারীদের আমি চিহ্নিত করেছিলাম। আগামী দিন যদি কেউ বেইমানি করে প্যাকেট করে পাঠিয়ে দেব। বাজারে শোনা যাচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যাবে। আমার গলা কেটে দিলে কাটা গলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বেরোবে। আমি বেইমান নই। বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নতুন দল আসছে।