Digha Jagannath Mandir 2025: দিঘাতেই যেন পুরীর আমেজ। শুরু থেকে সেই টার্গেটই বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণেই পুরীর মন্দিরের রাজেশ দৈতাপতির থেকে পদে-পদে পরামর্শ নেওয়া হয়। দায়িত্ব পেয়েই পুরীর মন্দিরের নকশাও ঘেঁটে দেখেন ইঞ্জিনিয়াররা। পুরীর মন্দিরের ঐতিহ্য আর আধুনিক আর্কিটেকচার মিশিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই মন্দির। এমনভাবে গড়া হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীরা পুরীর মতোই অভিজ্ঞতা লাভ করেন।
দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দির চত্বরে এখন চলছে ব্যাপক আচার-অনুষ্ঠান। শুক্রবার অস্থায়ী আটচালা ঘরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা এবং সুদর্শন দেবতাকে ১২ লিটার দুধ দিয়ে স্নান করানো হয়েছে। মন্দিরের বিমলা, লক্ষ্মী, সত্যভামা সহ অন্যান্য দেবতাদেরও একইভাবে স্নান সম্পন্ন হয়েছে। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র হোমযজ্ঞ। পুরীর মন্দিরের রাজেশ দৈতাপতির নেতৃত্বে চারদিকে চারটি হোমকুণ্ড এবং মাঝখানে মহাকুণ্ডে জ্বলছে হোমাগ্নি।
গর্ভগৃহে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবতাদের আহ্বান করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৫ জন মহিলা কলম হাতে গর্ভগৃহ প্রদক্ষিণ করেছেন। ২৯ এপ্রিল মহাযজ্ঞের আয়োজন হবে এবং তার আগে পর্যন্ত প্রতিদিন চলবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল মন্দিরের দ্বারোদঘাটন এবং দেবতাদের প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হবে।
মুখ্যমন্ত্রী ২৮ এপ্রিলই দিঘায় পৌঁছাতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। গোটা দিঘা শহর ইতিমধ্যেই সুদৃশ্য আলোকসজ্জায় সজ্জিত। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি নিরাপত্তা ও প্রস্তুতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ পাঁচজন মন্ত্রী এবং বহু শিল্পপতি আগে থেকেই দিঘায় থাকবেন।
আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২৫ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন। বহু মানুষ ইতিমধ্যেই মন্দির দর্শনের জন্য দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে দক্ষিণ পূর্ব রেলের সিদ্ধান্তে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। হাওড়া থেকে দিঘা এবং পাঁশকুড়া থেকে দিঘাগামী কিছু স্পেশাল লোকাল ট্রেন চলার কথা ছিল। কিন্তু আপাতত ৪ মে পর্যন্ত সেগুলি বাতিল করা হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে সব ট্রেন বাতিল। অন্য় সাধারণ ট্রেনের অপশন আগের মতোই পাবেন।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালের ২০ অগাস্ট দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ঘোষণা করেছিলেন। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ মন্দিরের জন্য ২০ একর জমি দেয়। নির্মাণের দায়িত্ব পায় হিডকো। পুরীর মন্দিরের আদলে নির্মিত হয়েছে দিঘার এই মন্দির। থাকছে জগন্নাথের মাসির বাড়িও। মন্দির নির্মাণ ও আচার অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে রাজেশ দৈতাপতির সঙ্গে প্রশাসনের একাধিক বৈঠক হয়েছে।
রথযাত্রার সময় পুরীর মতো দিঘাতেও সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেওয়া হবে। সেই জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৫ লক্ষ ১ টাকা দান করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি চান সাধারণ মানুষের জন্য মন্দির দর্শন অবাধ ও নির্বিঘ্ন হোক। তাই ভিআইপি-দের অতিরিক্ত ভিড় যাতে না হয়, সেই বিষয়েও নজর রাখার সুপারিশ করেছেন তিনি।