পশ্চিমবঙ্গে মেয়েকে আর এক মুহূর্তও রাখতে চাইছেন না দুর্গাপুরে গণধর্ষিতার বাবা। আদতে ওড়িশার বাসিন্দা ওই নির্যাতিতা দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বন্ধুর সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে খেতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ। সেই থেকে নিজের কলেজের হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন তিনি।
নির্যাতিতার বাবা কী বলছেন?
নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'আমার মেয়ে ভাল করে হাঁটতেও পারছে না। ওকে চিকিৎসকরা বেডরেস্টে রাখতে বলেছেন। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী, DG, SP এবং জেলাশাসক মেয়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন নিয়মিত। আমি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি, আমি মেয়েকে নিরাপদ জায়গায়া নিয়ে যেতে চাই। আমার মেয়ের প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে এখানে। তাঁকে অনুরোধ করেছি যাতে এখান থেকে ওকে নিয়ে যেতে পারি।'
ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা এই মেডিক্যাল কলেজ পড়ুয়াকে দুর্গাপুরের ওই কলেজের পিছনের জঙ্গলেই টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ পুলিশ স্টেশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মেয়েটির বাবা-মা। তাঁদের বক্তব্য, সহপাঠীর সঙ্গে অনিচ্ছা সত্ত্বেও খাবার খেতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন নির্যাতিতা। ইতিমধ্যেই পুলিশকে বয়ান দিয়েছেন তিনি। রবিবার রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। কথা বলবেন নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গেও। এছাড়াও তাঁর সঙ্গে দেখা করবে অভয়া মঞ্চের প্রতিনিধিরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের সদস্য ডা: কৌশিক চাকিও পৌঁছবেন রবিবার দুপুরেই। গোটা ঘটনা নিয়ে উদ্বেদ প্রকাশ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝিও। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারি এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কী বলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ?
দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের মুখপাত্র সুদর্শনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'রাতে মেয়েটি আমাদের জানিয়েছিল ওর ফোন হারিয়ে গিয়েছে এবং যৌন নিগ্রহ হয়েছে তাঁর সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিনকে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানাই। প্রিন্সিপাল এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওকে ভর্তি করেন। বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছে। আপাতত স্থিতিশীল। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। মেয়েটির মা-বাবার প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। তবে যেহেতু দু'জনেই প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিজের ইচ্ছেতেই তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিল, সেখানে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি আসে না। ক্যাম্পাসের মেন গেট পর্যন্ত নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে।'