Durgapur Rape Case: 'চুপচাপ করছি, করতে দে...' সেই রাতে দুর্গাপুরে কী ঘটেছিল? সব বললেন নির্যাতিতা

'জঙ্গলে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ওরা, চিৎকার করলে বলে চুপচাপ যা করার করতে দে।' ভয়াবহ সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা পুলিশকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন নির্যাতিতা।

Advertisement
'চুপচাপ করছি, করতে দে...' সেই রাতে দুর্গাপুরে কী ঘটেছিল? সব বললেন নির্যাতিতাকী বললেন নির্যাতিতা
হাইলাইটস
  • 'জঙ্গলে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা'
  • 'চিৎকার করলে বলে চুপচাপ যা করার করতে দে'
  • বিভীষিকাময় সেই রাতের বর্ণনা দিলেন নির্যাতিতা

সেদিন রাতে দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া পরানগঞ্জের জঙ্গলে ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশকে দেওয়া বয়ানে ভয়াবহ সেই রাতের কথা জানিয়েছেন নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়া। তাঁর কথায়, 'রাস্তা থেকে জোর করে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় কয়েকজন। জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় আমায়। আমি চিৎকার করলে আরও লোক ডাকবে আমায় ধর্ষণ করার জন্য।'

নির্যাতিতার বয়ান
ছাত্রী বলেন, 'আমরা দেখলাম গাড়ি রেখে কয়েকজন আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছিল। জঙ্গলের দিকে পালাতে চেষ্টা করেছিলাম। ৩ জন আমার দিকে তেড়ে এল। জাপটে ধরে ফেলল আমায়। টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল জঙ্গলের মধ্যে। ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আমার বন্ধুকে ফোন করে। ও ফোন ধরেনি। তারপর আমায় জঙ্গলের আরও ভিতরে নিয়ে যায়। পিছন থেকে চেপে ধরে রেখেছিল ওরা আমায়। জঙ্গলের মধ্যে শুইয়ে দেয়। আমি চিৎকার করতে শুরু করি। আরও লোক ডেকে ধর্ষণ করানোর হুমকি দেয়। ওরা বলে, চুপচাপ যা করছি করতে দে।'

জানা গিয়েছে, যে ৫ জন অভিযুক্ত ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে একজন ওই হাসপাতালেরই প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী। একজন হাসপাতালে কাজ করে, একজন পুরসভার ঠিকাকর্মী এবং আর একজন বেকার। 

Durgapur Rape Case
ঘটনার পুনর্নির্মাণে পুলিশ

কেমন আছেন নির্যাতিতা? 
দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি কলেজ ও হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার বর্তমান পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তিনি ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে তাঁর বাবা মনে করছেন, এ রাজ্যে মেয়ে নিরাপদ নয়। তাঁর প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। ফলে তিনি ওড়িশায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান মেয়েকে। ইতিমধ্যেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি নির্যাতিতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। সবরকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। 


ঘটনার পুনর্নির্মাণ
মঙ্গলবার নির্যাতিতার সহপাঠীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছল পুলিশ। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ঘটনার রাতের পুনর্নির্মাণ। দুর্গাপুরের ডিসি ইস্ট অভিষেক গুপ্তা এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার সুবীর দের নেতৃত্বে ঘটনার পুনর্নির্মাণ চলছে। বন্ধুটির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেলানো হচ্ছে নির্যাতিতার সঙ্গে তাঁর বয়ান। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে প্রথমে ৫ অভিযুক্তকেও ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। 

Advertisement

Durgapur Rape Case
দুর্গাপুরের নির্যাতিতার সহপাঠী

উল্লেখ্য, ওড়িশার বাসিন্দা দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটনার রাতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন এই সহপাঠীই। নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ, ঘটনার সময়ে নির্যাতিতাকে অভিযুক্তদের কাছে ফেলে পালিয়ে আসেন ওই সহপাঠী। কেন তিনি এমনটা করেছিলেন, সেদিন রাতে ঠিক কী কী দেখেছিলেন, সবটাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে। ছাত্রীর উপর যৌন লালসা চরিতার্থ করার পর অভিযুক্ত ধর্ষকরা নির্যাতিতার ফোন থেকেই সহপাঠীকে ঘটনাস্থলে কল করে ডেকে পাঠায়। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে সে কী দেখেছিল? জঙ্গলে গিয়েই বা কী দেখেছিল, কারা তাঁকে ফোন করেছিল, কারা সেখানে উপস্থিত ছিল, সবটাই পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পাশপাশি নির্যাতিতার দেওয়ার ঘটনার রাতের বয়ানের সঙ্গেও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে সহপাঠীর বয়ান। ঘটনার পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে ভিডিওগ্রাফি করা হচ্ছে। 

এদিকে, দুর্গাপুরের পরানগঞ্জ জঙ্গলের পাশেই বিজয়া গ্রামে দুই অভিযুক্ত রেয়াজুদ্দিন এবং নাসিরুদ্দিনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয় ঘটনার রাতের পোশাক। ধৃতদের পোশাকগুলি ইতিমধ্যেই ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, বুধবার মেডিকো-লিগাল পরীক্ষা করা হবে অভিযুক্তদের। 

 

POST A COMMENT
Advertisement