বাংলায় প্রত্যাবর্তনের ডাক দিলেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ৫০ দিনের 'ইনসাফ যাত্রা' শেষে রবিবাসরীয় ব্রিগেডের 'মুখ' বার্তা দিলেন 'কামব্যাকের'। বললেন, 'আমাদের কামব্যাক করার লড়াই।' পাশাপাশি, ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারির সুরে বাম যুব নেত্রী বললেন, 'যে মাঠে রাজনীতিকে নিয়ে বলেছিল খেলা হবে, সেই মাঠের দখল নিতে এসেছি। গোটা সিস্টেমের বদল করা আমাদের কাজ। এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব।' একইসঙ্গে, আগামী দিনের লড়াইয়ে বঙ্গবাসীকে বামেদের সঙ্গে শামিল হওয়ার আহ্বানও জানালেন তরুণ প্রজন্মের নেত্রী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রবিবারের ব্রিগেড ছিল বামেদের কাছে 'অ্যাসিড টেস্টের' মতো। সেই ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়েই বাংলার বুকে বামেদের ফেরানোর যে আহ্বান জানালেন মীনাক্ষী, তা নতুন মাত্রা যোগ করল।
বছরের প্রথম ব্রিগেড সভাতেই ভিড়ের নিরিখে নজর কেড়েছে বামেরা। ব্রিগেডের মুখ করা হয়েছে মীনাক্ষীকে। 'ক্যাপ্টেন' মীনাক্ষীর নেতৃত্বে এই ব্রিগেড ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রবিবার দুপুরে বক্তা হিসাবে মীনাক্ষীর নাম ঘোষণার পরই উজ্জীবিত হয় ব্রিগেড চত্বর। বক্তৃতা করতে মঞ্চে উঠেই মীনাক্ষী বলেন, 'লড়তে এসেছি তো?' এর পরেই বাংলার শাসকদলকে আক্রমণ করে বাম যুবনেত্রী বলেন, 'গোটা রাজ্যের যে মাঠে ওরা রাজনীতিকে নিয়ে বলেছিল খেলা হবে, সেই মাঠের দখল নিতে তো এসেছি।'
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিপর্যয় হয়েছিল সিপিএমের। শূন্য পেয়েছিল বামেরা। যা নিয়ে প্রায়ই রাজনীতির ময়দানে কটাক্ষ হজম করতে হয় বামেদের। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মীনাক্ষী বলেছেন, 'কোন গর্ধব, বামপন্থীরা শূন্য বলে। জিরোরা রাস্তার দখলের কথা বলে। ওঁরা বামপন্থীদের শক্তিকে ভয় পান। কোনও আক্ষেপ নেই। রাগ নেই...।' এর পরেই 'সিস্টেম বদলের' বার্তা দিয়ে মীনাক্ষী বলেন, 'গোটা রাজ্যের রাজনীতির দখল যখন বামেরা নেয় তখন ডানদিকে একটু অসুবিধা হয়। এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব। তাতে আমাদের অনেক সমস্যা হবে। বামপন্থীদের লড়াই একটা গলিতে নয়। বামপন্থীদের লড়াই তত দিন, যত দিন এ দেশের মাটিতে, অপশাসন, লুট, মেহনতি মানুষের টুঁটি ধরার সিস্টেম থাকবে।বামপন্থীরা রক্তবীজের ঝাড়, লড়ে যাবে।ইনসাফের লড়াই ক্ষণিকের নয়, দীর্ঘ। বলেছিলাম বড় মাঠে লড়াই হবে। যে মাঠে লড়াইয়ের শর্ত ধর্ম, ভাষা, হবে না।এই লড়াইয়ের মাটি থেকে ১ ইঞ্চি জায়গা ছাড়ব না। '
সিস্টেম বদলের পাশাপাশি প্রত্যাবর্তনের বার্তাও দিয়েছেন মীনাক্ষী। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কাদের দেশের সংসদে পাঠানো উচিত, সে নিয়েও রাজ্যবাসী যাতে 'সচেতন' হন, সেই কথাও বলেছেন তিনি। মীনাক্ষী বলেছেন, 'কামব্যাক করার জন্য লড়াই। আমরা জানি, এটা টি-২০ ম্যাচ নয়। টেস্ট ম্যাচ।' এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সদ্য ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচে সিরাজের প্রসঙ্গ টানেন মীনাক্ষী। তাঁর কথায়, 'ম্যাচ জেতাতে এরকম প্লেয়ার নামবে'। DYFI নেত্রী রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, 'মাথা উঁচু করে বাঁচতে গেলে লড়াইয়ে আসুন।' রাজনীতির কারবারীদের একাংশের মত, লোকসভা নির্বাচনে আগে হারানো জমি পুনুরুদ্ধার করার বার্তা দিলেন মীনাক্ষীরা। সিস্টেম বদলে 'কামব্যাক'-এর যে বার্তা দিলেন মীনাক্ষী, তা বঙ্গ রাজনীতিতে নয়া মাত্রা যোগ করল।
এদিন তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলকেই নিশানা করেছেন মীনাক্ষী। চুরি, লুট, দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে বাংলার শাসকদলকে আক্রমণ করেছেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক। আবার বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছেন, 'তৃণমূলের নেতাগুলো বিজেপির দিকে গিয়েছে, ভাগাড়ের দিকে গিয়েছে।' তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে আঁতাঁতের অভিযোগও করেছেন মীনাক্ষী।