SIR বা ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনের আগে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশনে নতুন নিয়োগ। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (ACEO) হিসেবে অরুণ প্রসাদ এবং যুগ্ম মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (JCEO) হিসেবে হরিশঙ্কর পানিকারকে নিয়োগ করেছে ইলেকশন কমিশন অব ইন্ডিয়া। এই সম্পর্কে ঘোষণা হয়েছে বৃহস্পতিবার।
জল্পনা শুরু রাজনৈতিক মহলে
আর SIR-এর আগে এই নিয়োগ ঘিরেই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে মনে করছেন, এই নতুন নিয়োগের মাধ্যমে মূলত দু'টি বার্তা দিতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। প্রথমত, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যাতে কোনওভাবে পশ্চিমবঙ্গের সরকার বা শাসকদলের চাপে পড়ে কাজ না করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে ECI। দ্বিতীয়ত, সুষ্ঠুভাবে যাতে SIR প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, সেটাও এই দুই নিয়োগের মাধ্যমে নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিহারের SIR প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সেখানে সর্বশেষ ভোটার তালিকাও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এ বার উৎসব শেষে কমিশন বাংলাতেও SIR চালু করতে চলেছে বলে খবর। আর তার প্রাক্কালেই এই দুই নিয়োগ।
রাজ্যের তালিকা থেকেই নিয়োগ
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারকে এই দুই পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের একটি তালিকা জমা দেওয়ার অনুরোধ করেছিল। আর সেই তালিকা থেকেই অরুণ প্রসাদ ও হরিশঙ্কর পানিকারকে বেছে নিয়েছে ইএসআই। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনে একবারে নিজের লোক বসায়নি কেন্দ্র। বরং রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেই নিয়োগ হয়েছে।
অরুণ প্রসাদ ২০১১ ব্যাচের পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইএএস আধিকারিক। অপরদিকে হরিশঙ্কর পানিকার ২০১৩ ব্যাচের আইএএস।
ডেপুটি মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক পদের জন্য চাওয়া হয়েছে নাম
ও দিকে নির্বাচন কমিশন ডেপুটি মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক পদের জন্যও তিনজনের নাম চেয়ে রেখেছে রাজ্যের কাছে। এই পদের জন্য এমন কাউকে চেয়েছে সংস্থা, যাঁর নির্বাচনী কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, কমিশনের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার সেই তালিকা প্রস্তুত করছে।
এই প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক পিটিআই-কে জানান, 'আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই নিয়োগ। এর মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।'
তবে বিশ্লেষকদের মতে, কমিশন এখন যতই অজুহাত দিক না কেন, এটা আদতে ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চাপে রাখার কৌশল। আরও নির্দিষ্ট করে বললে রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখাতেই নতুন এই নিয়োগ। তাই আগামিদিনে পরিস্থিতি ঠিক কোন দিকে গড়ায়, সেটার দিকেও নজর থাকবে সকলের।