মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন মঙ্গলবার। এবারের মেলায় তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবছর আরও উন্নত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
পরিবহন ও যাত্রী সেবার বিশেষ ব্যবস্থা
মেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের সুবিধার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ট্রেন চালানোর আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ২২৫০টি সরকারি বাস এবং ২৫০টি বেসরকারি বাসের ব্যবস্থা থাকবে। নদীপথে যাত্রী পরিবহনের জন্য থাকবে ৩২টি ভেসেল, ১০০টি বার্জ এবং ৯০০টি ছোট ভেসেল। ড্রেজিং শুরু হওয়ায় ২০ ঘণ্টা ধরে ভেসেল চলাচল করতে পারবে। প্রতিটি ভেসেলে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের সুবিধা রাখা হবে, যা ইসরোর প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে। তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতে খরচ কমাতে একক টিকিট ব্যবস্থা চালু করা হবে।
নিরাপত্তা ও জরুরি সেবা
তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তায় ২৫০০ সিভিল ডিফেন্স কর্মী, ৭৫টি দমকল ইঞ্জিন, ৭৫টি পুলিশের মাইক-সহ বাইক, এবং ১টি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে এবং গ্রিন করিডোর রাখা হবে জরুরি অবস্থার জন্য।
যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলায় কোস্টাল পুলিশ, রিভার পুলিশ, নেভি ও কোস্টাল গার্ড সমন্বিতভাবে কাজ করবে। বিএসএনএলের নেটওয়ার্ক সমস্যা মোকাবিলায় বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার
মেলায় আসা তীর্থযাত্রীদের জন্য ই-অনুসন্ধান এবং কিউআর কোড রিস্টব্যান্ড চালু করা হবে। কেউ হারিয়ে গেলে এই ব্যান্ড স্ক্যান করেই তীর্থযাত্রীদের সন্ধান পাওয়া যাবে। প্রতিটি তীর্থযাত্রীর ছবি সম্বলিত পরিচয়পত্র থাকবে।
মানসিক ও শারীরিক সহায়তা
প্রতিটি স্টপেজে "মে আই হেল্প ইউ" ডেস্ক থাকবে। মেলার এলাকা আলোকিত করতে আলোর বর্ণমালা তৈরি করা হবে। ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে ক্রাউড ম্যানেজমেন্টের জন্য। এছাড়া, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে ১১৫০টি।
সফল আয়োজনের লক্ষ্য
মুখ্যমন্ত্রী জানান, গঙ্গাসাগর মেলা শুধু তীর্থযাত্রা নয়, এটি সারা দেশের একটি বড় উৎসব। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সবার সহযোগিতায় মেলাকে সফল করে তোলা হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই উদ্যোগে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন।
গঙ্গাসাগর মেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁর মন্ত্রিসভার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তিনি সাগরমেলার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ববি তোমায় দু-তিনদিন থাকতে হবে। পুণ্যস্নান হয়ে গেল আর চলে এলাম, তা চলবে না।'