গার্ডেনরিচের ঘটনা তৃণমূল-সৃষ্ট বলে দাবি তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। স্থানীয় কাউন্সিলর শামস ইকবালের ছবি পোস্ট করে শুভেন্দু লিখলেন, 'ক'দিন আগেই ৫ কোটি টাকারও বেশি দামের বেন্টলি গাড়ি কিনেছেন।' একজন সাধারণ কাউন্সিলর কীভাবে এত ধনী হলেন? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
১৩৪ নং ওয়ার্ডের শামস ইকবালের গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন শুভেন্দু। তিনি শামস ইকবালকে 'অবৈধ নির্মাণের অবিসংবাদিত রাজা' বলে দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে একটি টুকটুকে লাল অ্যাস্টন মার্টিন স্পোর্টসকার আসে। জানা যায়, সাড়ে ৩ কোটির সেই গাড়ি শামস ইকবালের। সেই খবরের স্ক্রিনশট পোস্ট করে সেটা মনে করিয়ে দেন শুভেন্দু। তিনি লেখেন, 'তিনি একবার কেএমসি হেড অফিসে লাল রঙের অ্যাস্টন মার্টিন গাড়ি চালিয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন। তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এই মুহূর্তে ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে থাকা মানুষদের জীবন দিয়ে গড়া। সম্প্রতি তিনি একটি বেন্টলি গাড়ি কিনেছেন, যার দাম ৫ কোটি টাকারও বেশি।'
শুভেন্দুর দাবি, 'খোদ গার্ডেন রিচ এলাকায় এ ধরনের ৮০০-এর বেশি অবৈধ নির্মাণ রয়েছে।' তিনি বলেন, 'বামফ্রন্টকে সরিয়ে ২০১০ সালে, টিএমসি পার্টি কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পর থেকে, ৫,০০০-এরও বেশি জলাশয় অবৈধভাবে ভরাট করা হয়েছে...স্থানীয় কাউন্সিলর এবং স্থানীয় পুলিশের মধ্যে স্পষ্ট যোগসাজশ এটি, বড় TMC নেতাদের তত্ত্বাবধানেই হয়েছে।'
শুভেন্দুর টুইট:
TMC-made Disaster
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) March 18, 2024
----------------------
When a 5-storey building collapses like a Pack Of Cards in the Garden Reach Area, some pertinent questions need to be answered.
First of all, the focus should remain on rescuing people who might still be trapped under the debris. If the… pic.twitter.com/YLAhWNUhZY
উল্লেখ্য, শামস ইকবালের বাবা মুন্না ইকবাল। বরো চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁদের পরিবারের বিভিন্ন বড় ব্যবসা রয়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক দিক থেকেও তাঁরা বেশ সফল। শুভেন্দুর কথায়, '২০২১ সালের শেষ কর্পোরেশন নির্বাচনে শামস ইকবাল ১৩৪ নং ওয়ার্ডে (গার্ডেন রিচ এলাকা) ৯৮.২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতেন, যা কিনা সকল KMC কাউন্সিলরদের মধ্যে সর্বোচ্চ।'
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এক প্রোমোটারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মহম্মদ ওয়াসিম। তার বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন, ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, অবৈধ নির্মাণের জন্য KMC অ্যাক্টে মামলা দায়ের হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই স্থানে আগে একটি পুকুর ছিল। সেই পুকুর বুজিয়ে এই বহুতল নির্মাণের কাজ চলছিল। তাছাড়া বাড়ির দোতলা পর্যন্তই ভিত ও কলাম তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার উপরেই আরও ৪টি তলা তৈরি করেছিল প্রোমোটার। সেই কারণেই বিল্ডিংটি ভেঙে পড়েন বলে প্রাথমিক অনুমান।
সোমবার সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ববি হাকিম কার্যত মেনেই নেন যে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছিল। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা প্রদানের ঘোষণা করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'প্রোমোটারদের একাংশ বেআইনিভাবে বাড়ি তৈরি করেন। তার আগে ভাবা দরকার, আশপাশে যাঁরা আছেন, তাঁদের যাতে ক্ষতি না হয়। আমি শুনলাম প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই বহুতল তৈরি করা হয়নি।'