বিধানসভায় ধর্ষণ-বিরোধী বিল অপরাজিতা পাশ হয়েছে। বিল পাশের পর রাজ্যপালের সম্মতি প্রয়োজন। আর সেটা নিয়েই কড়া সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ধর্ষণ-বিরোধী বিলের টেকনিকাল রিপোর্ট পাঠানো হয়নি। রাজভবন সূত্রে খবর, এই বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে রাজ্যপাল বলেছেন, বিভিন্ন বিলের ক্ষেত্রে এই টেকনিকাল রিপোর্ট না পাঠানোটা রাজ্যের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, পরবর্তীকালে তিনি বিল ক্লিয়ার করতে না পারলে তখন তাঁর অফিসকেই দোষারোপ করা হবে।
রাজভবনের এক আধিকারিক জানান, 'অপরাজিতা বিলের সঙ্গে টেকনিকাল রিপোর্ট যুক্ত করা হয়নি। এর জন্য রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী বিলে সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের টেকনিকাল রিপোর্ট পাঠানো বাধ্যতামূলক।'
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে এমনটা জানিয়েছেন রাজভবনের এক আধিকারিক।
'এই প্রথম নয়। এর আগেও সরকার টেকনিকাল রিপোর্ট আটকে রেখেছিল এবং বিল ক্লিয়ার না করার জন্য রাজভবনকে দায়ী করেছিল,' দাবি করেছেন তিনি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও এই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে 'হোমওয়ার্ক করতে ব্যর্থ' হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। সিভি আনন্দ বোস বলেন, (অপরাজিতা) বিলটি অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং অরুণাচল প্রদেশে পাস করা এই জাতীয় বিলগুলির একটি কপি-পেস্ট বলে মনে হচ্ছে'।
উক্ত আধিকারিক বলেছেন, রাজ্যপাল মনে করছেন যে 'কেবল পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ধর্নার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কারণ তিনি সম্পূর্ণরূপে সচেতন যে এই একই ধরণের কয়েকটি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে মুলতুবি রয়েছে'।
বিধানসভায় ৩ সেপ্টেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে 'অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন ও সংশোধনী) ২০২৪ পাস হয়। এই বিলে ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার মৃত্যু বা 'ভেজিটেটিভ স্টেটে'র মতো ঘটনায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজার দাবি করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের বলা হয়েছে, 'প্রাথমিক রিপোর্টের ২১ দিনের মধ্যে ধর্ষণের কেসের তদন্ত শেষ করতে হবে।' আগের দুই মাসের সময়সীমার তুলনায় যা অনেকটাই কম। সেই সঙ্গে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্সও গঠন করা হবে। সেই টাস্ক ফোর্সে তদন্তের নেতৃত্বে থাকবেন মহিলা অফিসাররা।