অতিমারী কাটিয়ে সমাজ সুস্থ হয়ে উঠুক। সুস্থ হয়ে উঠুক তাঁর মা-বাবা। এমনই চায় ছোট গুলু। এখন সে প্রবল ব্যস্ত। খাবারের প্যাকেটের ওপরে ৫ বছরের ছোট্ট গুলু মার্কার দিয়ে লিখেই চলেছে, 'দ্রুত সেরে উঠুন' (Get well Soon)।
শান্তিনিকেতনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। আর এই পরিস্থিতে সব থেকে বেশি অসহায় শিশুরা। তাদেরই একজন শান্তিনিকেতনের গুলু। মা-বাবা দু'জনেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। পাঁচ বছরের শিশুটির আশ্রয়স্থল এখন মামার বাড়ি।
তবে গুলুর ব্যস্ততা দেখে চমকে উঠতে হয়। অফুরন্ত কাজ তার। করোনা আক্রান্তদের জন্য যে খাবারের প্যাকেট তৈরি করছেন রেড ভলান্টিয়াররা সেই প্যাকেটের উপরে পাঁচ বছরের ছোট্ট গুলু মার্কার দিয়ে লিখেই চলেছে, 'Get Well Soon।' সে চায় এই অতিমারী কাটিয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক সমাজ, সুস্থ হয়ে উঠুন তাঁর মা-বাবা।
সুহাসিনী মজুমদার বাড়ির সবাই তাকে আদর করে ডাকে গুলু নামে। বর্ধমানে থাকেন গোলুর মা-বাবা এবং দাদু। তাঁরা গত সাত দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হন। এখন তাঁরা একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর পরেই গুলুকে তার মামার বাড়ি শান্তিনিকেতনে আনা হয়।
সেই থেকে সে শান্তিনিকেতনে রয়েছে। শনিবার গুলুর দাদু মারা গিয়েছে। গুলু কিন্তু তা জানে না। একদিন আগে দাদুকে হারিয়েছে সে, আঁচ পায়নি।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে গুলু মামার বাড়িতে থেকে কাজ করে চলেছে রেড ভলান্টিয়ার্স। ছোট্ট গুলুর বাবা-মা এখন করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের কাছে যাওয়ার জন্য গুলু বার বার বায়না করে। বাড়ির অন্যরা তাকে বোঝায় এখন বাবা-মায়ের কাছে যাওয়া যাবে না।
বাবা-মায়ের কাছে রেড ভলান্টিয়ার খাবার পৌঁছে দেবে। আর এই কথা শুনে তাঁর বায়না, সে-ও রেড ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে কাজ করবে। তার একটিই চাওয়া, তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক তারা বাবা মা ও দাদু।
খুদের আর্জি মেনে নেন রেড ভলান্টিয়ারদের সদস্য মামা ঋষভ মুখোপাধ্যায়। আর গুলু শুরু করেছে রেড ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে কাজ করা। অফুরন্ত সেই কাজ। ক্লান্তিহীন ভাবে সে করে যাচ্ছে।
খাবার প্যাকেট করা আর তার উপরে বার্তা লেখার কাজ। প্রত্যেকটা খাবারের প্যাকেটে তাঁর কাঁচা হাতে সে লিখে দিচ্ছে, ‘Get well Soon।' গুলু এখন বীরভূমে করোনা আক্রান্তদের কাছে একটা প্রেরণা। তার ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।