ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে দেশজুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ১৯৭১ থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গড় বৃষ্টিপাত লং পিরিয়ড অ্যাভারেজের (LPA) প্রায় ১০৯ শতাংশ ছাড়াতে পারে। এর অর্থ, এ মাসে দেশের গড় বৃষ্টিপাত ১৬৭.৯ মিলিমিটার পার করার সম্ভাবনা প্রবল।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, বর্তমানে মৌসুমি অক্ষরেখা রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে না। তবে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এর প্রভাবে মঙ্গলবার নাগাদ নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ফের ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ঝড়বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। মঙ্গলবার হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির (৭-১১ সেমি) পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারও ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান-সহ একাধিক জেলায় সতর্কতা জারি থাকবে। আগামী শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টি চলবে বলে পূর্বাভাস।
সর্বভারতীয়ভাবে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ অঞ্চলে স্বাভাবিক বা তার চেয়ে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উত্তর-পূর্ব ও পূর্ব ভারতের কিছু এলাকা, দক্ষিণ উপদ্বীপের কয়েকটি অংশ এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।
তাপমাত্রার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা থাকবে। পশ্চিম-মধ্য, উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের বহু অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কম থাকতে পারে। অন্যদিকে, পূর্ব-মধ্য, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু এলাকা এবং পশ্চিম উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতের তাপমাত্রা দেশের অনেক অংশে স্বাভাবিক বা তার উপরে থাকলেও উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণের কিছু এলাকায় তা তুলনামূলকভাবে কম থাকবে।
এই পূর্বাভাস কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সেপ্টেম্বর হলো খরিফ ফসলের প্রধান সময়। অতিরিক্ত বৃষ্টি সেচনির্ভর ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে এর ফলে স্থানীয় বন্যা ও জলাবদ্ধতার ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।