scorecardresearch
 

Hindustan Motors:ইলেক্ট্রিক গাড়ি-স্কুটার, উত্তরপাড়ায় 'কামব্যাক' করছে হিন্দমোটরস?

গত কয়েক বছরে হুগলিতে বন্ধ হয়েছে একাধিক কারখানা। ক্রমশ অন্ধকার ঘনিয়েছে শিল্পাঞ্চলে। হিন্দুস্তান মোটরসের ঐতিহ্যবাহী ‘অ্যাম্বাসেডর’ ব্র্যান্ড তৈরি হত হিন্দমোটরের কারখানাতে। তবে আধুনিক প্রজন্মের গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে বদলাতে পারেনি অ্যাম্বাসেডর গাড়ি। ফলে পড়তে হয়েছিল কড়া প্রতিযোগিতায়। এবার সেই হিন্দমোটরের বিখ্যাত কারখানাতেই বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হতে চলেছে।

Advertisement
হাইলাইটস
  • ফিরছে সুদিন!
  • উত্তরপাড়ার হিন্দমোটরে এবার তৈরি হবে Electric Car

গত কয়েক বছরে হুগলিতে বন্ধ হয়েছে একাধিক কারখানা। ক্রমশ অন্ধকার ঘনিয়েছে শিল্পাঞ্চলে। হিন্দুস্তান মোটরসের ঐতিহ্যবাহী ‘অ্যাম্বাসডর’ ব্র্যান্ড তৈরি হত হিন্দমোটরের কারখানাতে। তবে আধুনিক প্রজন্মের গাড়ির সঙ্গে  পাল্লা দিয়ে নিজেকে বদলাতে পারেনি অ্যাম্বাসেডর গাড়ি। ফলে পড়তে হয়েছিল কড়া প্রতিযোগিতায়। এবার সেই হিন্দমোটরের বিখ্যাত কারখানাতেই বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হতে চলেছে। হিন্দুস্থান মোটরস  সূত্রে খবর, এজন্য ইতিমধ্যে ‘মউ’ স্বাক্ষর হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি আর্থিক বছরেই উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে উত্তরপাড়ায়।

ইতিহাস বলছে, ১৯৫৮ সালে ‘অ্যাম্বাসাডর’ গাড়িটি বাজারে আনে হিন্দুস্তান মোটরস। হুগলির উত্তরপাড়ার কারখানায় তৈরি করা এই গাড়ি সারা দেশে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কতই না স্মৃতি এই ব্র্যান্ডের গাড়িকে ঘিরে। একটা সময় পর্যন্ত মন্ত্রী-আমলা থেকে শুরু করে নায়ক-নায়িকা সবাই ছিলেন এ গাড়ির সওয়ারি। ভারতে প্রাইভেট কার মানেই গোলগাল অ্যাম্বাসেডর। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ২০১৪ সালে বন্ধ হওয়া ওই কারখানা। জানা যাচ্ছে এশিয়ার দ্বিতীয় আর ভারতের প্রথম গাড়ি নির্মাতা  আট বছর পর গাড়ি উৎপাদন শুরু হতে চলেছে হুগলির উত্তরপাড়ার হিন্দ মোটরে। ইউরোপের একটি বিখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মান করবে সংস্থা। 

 হিন্দুস্তান মোটরের ডিরেক্টর উত্তম বসু জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে দু চাকা এবং চার চাকা গাড়ির তৈরির দিকেই মনোযোগ দেওয়া হবে। জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে রয়েছে হিন্দুস্তান মোটর। উত্তমবাবু বলেন, “প্রাথমিকভাবে যৌথ উদ্যোগে দু’চাকার বাহন উৎপাদন শুরু করতে ইউরোপীয় অংশীদার সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ স্বাক্ষরপর্ব শেষ। অংশীদারিত্ব-সহ বাকি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার পর মূল চুক্তি স্বাক্ষরের পালাও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। ২০২৩—এর মার্চ মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে।” তিনি আরও জানান, এই জয়েন্ট ভেঞ্চার হবে ৫১:৪৯ অংশীদারিত্বে। যার মধ্যে ৫১ শতাংশ থাকবে হিন্দুস্তান মোটরের কাছে। তবে তিনি যোগ করেন, অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই বিষয়ে যথাযথ মূল্যায়ন করবে তারা।

Advertisement

 হিন্দুস্তান মোটরের ডিরেক্টর উত্তম বসুর  কথায়, “উত্তরপাড়ায় আমাদের হাতে ২৮৬ একর জমি আছে। সেখানে ছাউনি ও অন্যান্য পরিকাঠামোর অনেকটাই বিদ্যমান। তাই একবার সইসাবুদ পর্ব মিটে গেলে উৎপাদন শুরু হতে সময় লাগবে না।” কারখানার জমির একাংশ হীরানন্দানি শিল্পগোষ্ঠীকে বিক্রি করেছে হিন্দুস্থান মোটরস। বিক্রির টাকা তারা লগ্নি করবে বাইক কারখানায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৪২ সালে সি কে বিড়লার হাত ধরে এদেশে শুরু হয় হিন্দুস্তান মোটরের যাত্রা। তারপর প্রায় ৭ দশক ধরে রমরমিয়ে চলে এই গাড়ির বাজার। যদিও ১৯৮৩ সালে মারুতি ৮০০ লঞ্চ হওয়ার পর ক্রমশ পড়তে থাকে অ্যাম্বাসাডর গাড়ির মার্কেট শেয়ার। তারপর ধীরে ধীরে কমতে থাকে এই গাড়ির চাহিদা। শেষমেষ ২০১৪ সাল হিন্দুস্তান মোটরের উত্তরপাড়া প্লান্টে গাড়ি উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তহবিলের অভাব, কম উৎপাদনশীলতা, চাহিদার অভাব সহ বিভিন্ন কারণের জেরে কাজ বন্ধের (সাসপেনশন অব ওয়ার্ক) নোটিশ জারি করে হিন্দুস্তান মোটর।

একসময় উত্তরপাড়া ও কোন্নগর জুড়ে প্রায় ৭০০ একর জমি ছিল হিন্দুস্তান মোটরের কাছে। কিন্তু ২০০৭ সালে ৩১৪ একর জমি শ্রীরাম গোষ্ঠীকে বিক্রি করে দেয় এই সংস্থা। গত বছর, হিরানন্দানি গ্রুপ একটি লজিস্টিক এবং হাইপারস্কেল ডেটা সেন্টার পার্কের জন্য ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য হিন্দুস্তান মোটরের সাথে একটি মৌ স্বাক্ষর করে। সবমিলিয়ে বর্তমানে হিন্দুস্তান মোটরের কাছে রয়েছে ২৯৫ একর জমি। সেখানেই এই জয়েন্ট ভেঞ্চার গড়ে তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে।  সূত্রের খবর, গ্রিনফিল্ড প্রকল্প হিসাবে এই উদ্যোগে উৎপাদন শুরু করতে প্রাথমিকভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে চলেছে। এর সঙ্গে হিন্দ মোটর কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা জমি ও পরিকাঠামো ধরলে মোট লগ্নির পরিমাণ প্রায় ১২০০ কোটি টাকা।

Advertisement