হুমায়ুন কবীর কখনও বলছেন, 'আমি চাই দল আমায় তাড়িয়ে দিক।' আবার কখনও বলছেন, 'নতুন দল গড়ব।' একের পর এক মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি করেছেন হুমায়ুন কবীর। পঞ্চায়েত নির্বাচনে টাকার বদলে টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে দলে গুরুত্ব হারানোর মতো ইস্যুগুলি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ তাঁর। সেক্ষেত্রে লোকসভায় তৃণমূলের টিকিটে লড়বেন না BJP প্রস্তাব দিলে দলবদল করবেন? নানা জল্পনার মাঝেই এবার bangla.aajtak.in-এ নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক।
ছাব্বিশের আগে দলবদল করবেন?
হুমায়ুন কবীরের কথায়, 'যদি তৃণমূল কংগ্রেসের আচরণ না শোধরায়। তারা যদি সঠিক মূল্যায়ণ না রে। মুর্শিদাবাদ জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব যোগ্য লোকের হাতে না দিয়ে যদি নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে যারা ৩ নম্বরে থাকে, তাদের দেওয়া হয়। যারা দলকে পৈতৃক সম্পত্তি ভেবে নিয়েছে, তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। আর আমাদের ব্রাত্য করে রাখে, তাহলে সময় কথা বলবে।'
জেলা সভাপতি তাঁর দলীয় লোকজনকে ধমকে-চমকে রাখার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ হুমায়ুন কবীরের। DM, SP, OC-কেউই তাঁর কথা শোনেন না। সেক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে থাকা ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে BJP ছাব্বিশের টিকিট দেওয়ার প্রস্তাব দিলে কি হুময়ান কবীর যাবেন? তিনি বলেন, 'কখনও না। ২০১৮ সালে একবার BJP-তে গিয়েছিলাম পঞ্চায়েত ভোটের আগে। সে সময়ে অধীর চৌধুরী কোর্টে কোর্টে ঘুরে বেরিয়েছিলেন, আমাদের পাশে দাঁড়াননি। সব ভোট লুট হয়ে গিয়েছিল। শুভেন্দুর নেতৃত্বে চোখের সামনে অত্যাচার হয়েছিল। আমি খানিকটা অভিমানে, খানিকটা রাগে নিজে থেকেই যোগাযোগ করেছিলাম কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে। সে সময়ে তিনি এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক ছিলেন। ইন্দোরে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। দীলিপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থাকাকালীনই আমায় বিজয়বর্গীয় দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে যোগদান করান। বলেছিলাম আমি BJP করব। যা এ রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষ BJP-কে ভয় না পায়, ঘৃণা না করে এটা দেখাতেই দলটা করতে চেয়েছিলাম। দিলীপ ঘোষ আমার যোগদানের সময়ে যাননি। ২০১৯ সালে আমি ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম কিন্তু কেউ প্রচারে আসেনি। মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষরা আটকে দিয়েছিলেন। নিজে প্রচার করে আড়াই লক্ষ ভোট পেয়েছিলাম BJP-র প্রতীকে। এর নাম হুমায়ুন কবীর।'
দল টিকিট না দিলে কী করবেন?
হুমায়ুন কবীরের অভিযোগ, পদে পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করছে,ভুয়ো মামলা দায়ের করছে। শাসকদল হাত-পা বেঁধে রেখেছে তাঁর। তিনি বলেন, 'মুর্শিদাবাদের মানুষ ভোট দিলে বিরোধী বেঞ্চে গিয়ে বসব। যারা সরকারে থাকবে তাদের বিরুদ্ধে গঠনমূলক সমালোচনা করব। এভাবে তাচ্ছিল্য করলে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে লড়ে কী করব?' তাঁর সংযোজন, 'শুভেন্দুর দলে আমি পরীক্ষিত। শুভেন্দুর আগেই সে দল আমি করেছি। কিন্তু BJP প্রস্তাব দিলে যেতে রাজি নই। যদি তৃণমূল আমাকে সাসপেন্ড করে আমি নতুন দল গড়ে কংগ্রেস, CPIM-এর সঙ্গে আসন সমঝোতা করে আমি আমার শক্তি দেখাব। মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলব। মুর্শিদাবাদের ২২টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে প্রার্থী দেব। ১৪টা ওদের জোটের জন্য ছেড়ে দেব। তৃণমূলের রথি মহারথিদের বিরুদ্ধে লড়ব। আমি রাজনীতি করি, তোলাবাজি করে খাই না। আমায় কেউ এক আঙুল দেখালে আমি ২ আঙুল দেখাব।'