সন্দেশখালির ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। দলে সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের পদস্থ অফিসারেরা সমান হারে থাকবেন। সন্দেশখালির ঘটনার কেস ডায়েরি এবং তদন্তভার রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে সিটের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিতে পারবে সিট।
সিটে থাকার জন্য আইপিএস জসপ্রীত সিংহকে মনোনীত করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনও নিজেদের কোনও অফিসারের নাম চূড়ান্ত করেনি সিবিআই। এ জন্য আদালতের কাছে তারা সময় চেয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে অফিসারের নাম জানাতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সন্দেশখালির ঘটনায় এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। সম্প্রতি অন্তরালে থেকে হাইকোর্টে মামলায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে আইনজীবী মারফৎ আদালতে শাহজাহান জানিয়েছেন, তিনি মামলায় যুক্ত হতে চান না। কেন শাহজাহানকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে শাসক বনাম বিরোধী বাগযুদ্ধ চলছে। সন্দেশখালির ঘটনার জন্য মমতাকেই 'দায়ী' করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।' বেলডাঙার সভায় শুভেন্দু আরও বলেছিলেন, 'শেখ শাহজাহানের বাড়িতে দুষ্কৃতি তাণ্ডব হয়েছে। চোর মমতার প্রিয় পাত্র শেখ শাহজাহান। মমতার পুলিশ হয়তো জানতে পেরেছিল যে, তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি যাচ্ছে। তাই বাঁচাতে এ সব করেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, পশ্চিমবঙ্গে কেউ সুরক্ষিত নেই।' অন্য দিকে, এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'তদন্ত চলছে। কোনও মন্তব্য করব না।' সন্দেশখালিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী ঘটেছে সন্দেশখালিতে?
গত ৫ জানুয়ারি সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডির একটি দল। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে এই অভিযান বলে খবর। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে ইডির আধিকারিকরা যাওয়ার চেষ্টা করলেই রুখে দাঁড়ান বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা শাহাজাহানের অনুগামী বলে দাবি। শাহাজাহানের বাড়িতে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির আধিকারিকরা। অভিযোগ, সেই সময়ই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর করা হয়। ধাক্কা মেরে সরানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। ইডির আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়া করা হয়। তাঁদের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই সময় তিন আধিকারিক জখম হন। আক্রান্ত হয় সংবাদমাধ্যমও।