সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। আদালত থেকে বিরোধী শিবির, সব খানেই সমলোচিত হচ্ছে রাজ্য সরকার। সোমবার মাঝরাতে কলকাতা পৌঁছেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) ডিরেক্টর রাহুল নবীন। আর এর মাঝেই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে কার্যত সমর্থন জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী। তার অভিমত 'এখন বাংলার একটা জায়গায় জনবিস্ফোরণ হয়েছে, এরপর সারা দেশে এই জনবিস্ফোরণ হবে।'
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ইডি আধিকারিকদের। ইডি ও নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসারদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তাতে বেশ কয়েকজন ইডি অফিসার আহত হন। ওই ঘটনার পর থেকেই পলাতক শেখ শাহজাহান। বিরোধীরা অভিযোগ করে এভাবে তদন্তকারী সংস্থার উপরে হামলা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির পতনকেই নির্দেশ করছে। এনিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ইডির ওপর সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তাকে ‘জনবিস্ফোরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনার চারদিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ নেই শাহজাহানের। কোথায় লুকিয়ে কেউ জানেন না। এই প্রসঙ্গ নিয়েই সোমবার প্রশ্ন করা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার অন্যতম মুখ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। মধ্যমগ্রামে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে শোভনদেব বলেন, “আরে ভাই এবার তো জনবিস্ফোরণ হবে। এখন তো সবে একটা জায়গায় হয়েছে। সারা বাংলাজুড়ে জনবিস্ফোরণ হবে। ভারতবর্ষের যেখানে যেখানে বিজেপি সরকার নেই, সেখানে ইডি যাচ্ছে।”
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে মধ্যমগ্রামে দলীয় কার্যালয়ে এসেছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।মূলত লোকসভা নির্বাচনের আগে দলকে একসূত্রে বাঁধতে এবং সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা করতেই এদিন বৈঠকে বসে মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত এই কোর কমিটি। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ-সহ কোর কমিটির অধিকাংশ সদস্যই হাজির ছিলেন এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এবার বাংলাজুড়ে এমন ঘটবে বলে হুঁশিয়ারি দেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা খরদহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিকে সন্দেশখালির ঘটনার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা। এ ব্যাপারে রাজ্যপাল থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি, একযোগে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সকলে।